নাটোরের গুরুদাসপুরের বিয়াঘাট ইউনিয়নে লোকাল গভার্ন্যান্স সাপোর্ট প্রজেক্টের (এলজিএস) আওতায় গ্রামীণ রাস্তা এইচবিবিকরণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এব্যাপারে স্থানীয়দের আপত্তি ও প্রতিবাদ উপেক্ষা করে সংশ্লিষ্টরা তাদের ইচ্ছেমত কাজ করে চলেছেন বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০২০-২০২১ অর্থবছরের এলজিএসপি’র আওতায় বিয়াঘাট ইউনিয়নের দস্তানানগর গ্রামের আছেরের মোড় হতে করিমের বাড়ি অভিমুখে রাস্তাটি এইচবিবিকরণ ৭৫৪ ফুট দৈর্ঘ্য ও এ্যাজিংসহ সাড়ে আট ফুট প্রস্থ্যের এ রাস্তাটির জন্য মোট ৬ লাখ ৮৬ হাজার ২৭৬ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কিন্তু রাস্তাটি নির্মাণের ক্ষেত্রে ওয়ার্ক অর্ডার না মেনে নিম্মমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তাটির অর্ধেক কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। রাস্তায় ব্যবহার করা এবং রাস্তার পাশে জমানো ইটের সবগুলোই দুই ও তিন নম্বর। আরো দেখা যায়, সাব বেইজ পর্যায়ে ৬ ইঞ্চি পরিমাণ ভরাট বালি দেয়ার কথা থাকলেও সামান্য পরিমাণ বালু ছিটিয়ে দেয়া হয়েছে। ছিটিয়ে দেয়া ভরাট বালির উপরে ইটের সোলিং করতে গিয়ে প্রতিটি ইটের মধ্যে ৩ থেকে ৪ ইঞ্চি পরিমাণ ফাঁকা রেখে সাজানো হচ্ছে। মিস্ত্রী ওই ফাঁকা জায়গায় ইট ঢুকিয়ে দেখান। আর ওই ফাঁকা জায়গাগুলো ভরাট বালি দিয়ে পূরণ করে তার উপরে ইটের স্তর সাজানো হচ্ছে। এভাবে নীচের ফাঁকা অংশগুলো ঢেকে দেয়া হয়েছে। নির্মিত অংশের রাস্তার ওপরের ইট সরিয়ে মিস্ত্রীরা এমনটাই দেখালো।
স্থানীয় কমপক্ষে ১০জন ব্যক্তি বলেন, ইটগুলো চাঁচকৈড় থেকে আনা হচ্ছে। এসব ইটের মধ্যে ১ নম্বরের কোন ইট নেই। প্রায় সবগুলোই তিন নম্বর ইট। তাদের এধরনের নিন্মমানের ইট দিয়ে কাজ করতে নিষেধ করলে তাদের ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে। ওই সময় এক নম্বর মানের ইট দেখাতে বললে মিস্ত্রীরা তা দেখাতে পারেননি।
কাজে নিয়োজিত হেডমিস্ত্রী দুলাল মোল্লা সাব বেইজে ছিটিয়ে ভরাট বালি দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, চেয়ারম্যানের ভাতিজা মুক্তা যেভাবে কাজ করতে বলেছেন সেভাবেই করা হচ্ছে।
বিয়াঘাট ইউনিয়ন পরিষদ সচিব জালাল উদ্দিন জানান, আরএফকিউ এর মাধ্যমে কাজ করা হচ্ছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
বিয়াঘাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান প্রভাষক মোজাম্মেল হক জানান, যেসব ইট খারাপ আছে, সেগুলো বাদ দিতে বলেছি। কিন্তু পরে কি করেছে খোঁজ নিয়ে দেখবো। তবে একটা কথা না বললেই নয়, ইটের দাম বেশী হওয়ায় নিন্মমানের ইট ব্যবহার করতেই হয়।
স্থানীয় সরকার বিভাগ নাটোরের উপ-পরিচালক গোলাম রাব্বী জানান, এ বিষয়ে আমার কাছে কোন অভিযোগ আসেনি। ইউনিয়ন পরিষদ এ কাজের বাস্তবায়ন সংস্থা। তাদের কাজ তারাই করে। তবে গুরুদাসপুরের ইউএনওকে বলে খোঁজ নেয়া হবে। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।#