কক্সবাজারর চকরিয়ায় ছরাখাল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন কালে গর্তে বালু চাপা পড়ে আলী হোসেন (৩৫) নামে এক শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের স্ত্রী সেলিনা আক্তার বাদী হয়ে মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) সকালে চকরিয়া থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ডুলাহাজারা ইউনিয়নের নারী ইউপি সদস্য নূর নেওয়াজ বেগম ও তার ছেলে জমির উদ্দিনের নাম উল্লেখপূর্বক ৫-৬ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হলেও কৌশলে আড়াল করা হয়েছে বালু মহালের সাথে সংশ্লিষ্ট ইজারাদারদের। এর আগে সোমবার (৮ নভেম্বর) বিকাল ৫টার দিকে উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের পাহাড় ঘেষা বগাচতর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আলী হোসেন কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুস্কুল ইউনিয়নের কুলিয়া পাড়ার বশির আহমদের ছেলে। তিনি ডুলাহাজারাস্থ শ্বশর বাড়িতে থেকে শ্রমিকের কাজ করতেন। এদিকে বালু চাপা পড়ে নিহত শ্রমিক আলী হোসেনের লাশ কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গ থেকে ময়নাতদন্ত শেষে তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ।
স্থানীয় লোকজন জানায়, ডুলাহাজারা ইউনিয়নের পাহাড় ঘেষা বগাচতর এলাকায় ছরাখাল, পাহাড় ও সমতল ভূমিতে চকরিয়ার কয়েকজন প্রভাবশালী যুবলীগ নেতা শ্রমিক ভাড়া করে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে ও কুড়ে প্রতিদিন অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিল। তারা সরকারীভাবে ২ একর ৪৮ শতক বালু মহালের জমি লীজ নিলেও আশপাশের কয়েক শত একর জমিতে গর্ত করে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিল। নিয়মিত বালু উত্তোলনের ফলে ওই পয়েন্টে বেশ কয়েকটি বড় আকারের গর্তের সৃষ্টি হয়। সোমবার একটি গর্তে নেমে বালু উত্তোলন করার সময় ডাল থেকে বালু ভেঙ্গে চাপা পড়ে নিহত হয় শ্রমিক আলী হোসেন। এসময় আরো কয়েকজন শ্রমিক পালিয়ে রক্ষা পায়। পরে স্থানীয় লোকজন নিহত ওই শ্রমিককে লাশ উদ্ধার করে। এ খবর পেয়ে সন্ধা সাড়ে ৬টার দিকে চকরিয়া ধানার এস আই আবু সায়েমের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জুয়েল ইসলাম বলেন, ডুলাহাজারা ইউনিয়নের বগাচতর এলাকায় বালু চাপা পড়ে আলী হোসেন নামে এক শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের স্ত্রী সেলিনা আক্তার বাদী হয়ে গতকাল মঙ্গলবার সকালে চকরিয়া থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ডুলাহাজারা ইউনিয়নের নারী ইউপি সদস্য নূর নেওয়াজ বেগম ও তার ছেলে জমির উদ্দিনের নাম উল্লেখপূর্বক ৫-৬ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তপূর্বক পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।