সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলাধীন জাউয়াবাজারে হাজারো টমটম বা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা একহাজার চালকদের কাছে পুলিশ ও প্রশাসনের নাম ভাঙ্গিয়ে ৫ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়,সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়কের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থান। প্রতিদিন ঢাকা কিংবা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা বড় বড় যানগুলো এ পথ হয়েই সুনামগঞ্জে প্রবেশ করে। দীর্ঘদিন খানাখন্দে জর্জরিত থাকলেও সম্প্রতি প্রশস্ত করা হয়েছে জাউয়াবাজারের সড়ক।তবে সড়ক প্রশস্ত করা হলেও ‘টমটম’ নামে পরিচিত ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার যথেচ্ছ চলাচলে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে মহাসড়কের স্বাভাবিক যান চলাচলে গতি। যত্রতত্র পার্কিং করার ফলে দেখা দিচ্ছে সড়কের যানজট ও জ্যাম। এসব সিন্ডিকেটের অবৈধ বিশেষ’ স্টিকারের বিরুদ্ধে পুলিশ প্রতিদিন টমটম আটক ও শতাধিক মামলা করে প্রতিরোধ করতে পারছেন বলে ট্রাফিক পুলিশ অভিযোগ করেন।
এছাড়া যত্রতত্র পার্কিং মহাসড়কে চলাচল অবৈধ হবার পরও সুনামগঞ্জের জাউয়াবাজারে এক ‘বিশেষ’ স্টিকারের ক্ষমতাবলে ‘বৈধ’ হয়ে উঠেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, জাউয়াবাজারে মহাসড়কের ওপর অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে অবৈধ স্ট্যান্ড। এ অবৈধ ষ্ট্যান্ড নিয়ন্ত্রন করেন লোকমান. হীরক মিয়া.গোলাম মুক্তাদির ও রেজা মিয়াসহ ৪জন ম্যানেজার মিলে এসব বিশেষ’ স্টিকারের টাকা পয়সা টমটমের চালকদের কাছ থেকে আদায় করে নেয়ার অভিযোগ করেন চালকরা। তাদের কথা মতো না দিলে গাড়ির চাবি জোরপু্বক চিনিয়ে নেন। এখানে নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গলি দেখিয়ে চলাচল করছে হাজারো বেশি টমটম। অভিযোগ আছে, মহাসড়কে এই যান চলাচলে প্রভাব রয়েছে ক্ষমতাসীন দলের কিছু নেতাকর্মীরা। আর ‘পুলিশ ধরবে না’ এমন কথা বলে অটোরিকশাগুলোতে আলাদা একটি স্টিকার লাগিয়ে আদায় করা হচ্ছে ৫০০ টাকা। স্টিকারে ‘জাউয়াবাজার অটোরিক্সা-ইজি বাইক মালিক ও শ্রমিক সমবায় সমিতি লিমিটেড’ এর সভাপতি রেজা মিয়া তালুকদারের নাম লেখা রয়েছে। লেখা আছে, চলন্ত অবস্থায় চালকের ফোন আলাপ নিষেধ। তবে একাংশে যেন আইনকে ব্যঙ্গ করেই বলা হচ্ছে, ‘ট্রাফিক আইন মেনে চলুন, পুলিশকে সহযোগিতা করুন’। চালকদের ধারণা, এই স্টিকার লাগানো থাকলে পুলিশ ধরবে না। চালকের দাবি, স্টিকার সংবলিত যানকে পুলিশ ধরার কথা নয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন চালক জানান, এই স্টিকার দেয়ার সময় পাঁচশ টাকা আদায় করে নেন। বলা হচ্ছে , এ স্টিকার দেখলে পুলিশ আর কখনো ধরবে না।
জাউয়াবাজারে কর্মরত সাবেক ট্রাফিক সার্জেন্ট হামিদুর রহমানও বর্তমান সার্জেন্ট কামরুল ইসলাম জানান, একসময় জাউয়াবাজারে এক হাজারেরও বেশি ব্যটারিচালিত অটোরিকশা ছিলো। আমাদের প্রতিদিন অভিযানের প্রেক্ষিতে সংখ্যা প্রায় কমে গেলেও আবারও একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় তারা জোরপু্বক চালায়। এদেরকে ধরতে বা মামলা করতে গেলে তাদের সঙ্গে ধাক্কা টেলা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে প্রতিনিয়ত। গত ১৩ ই মার্চ এ অবৈধ স্টিকার বন্ধ করার এ ঘটনায় প্রতিবাদ করায় ট্রাফিক সাজেন্ট হামিদুর রহমান রেজা মিয়া তালুকদারে হাতে লাঞ্চিত হয়। এ ঘটনার পর সার্জেন্ট হামিদুর রহমান বাদী হয়ে রেজা মিয়া তালুকদার তালুকদার সহ তিন ব্যক্তি নামে ছাতক থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
এব্যাপারে ইজি বাইক মালিক ও শ্রমিক সমবায় সমিতি লিমিটেড’ এর সভাপতি রেজা মিয়া তালুকদার তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ স্বীকার করে বলেন শ্রমিকদের কল্যানে এক সংগঠন তৈরি করেছেন তিনি। দীঘদিন ধরে এক চত্রু তার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার করছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।
এব্যাপারে ওসি শেখ নাজিম উদ্দিন অভিযোগ প্রাপ্তি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন অবৈধ স্টিকারের সঙ্গে কারা জড়িত এসব তদন্তপুবক আইনানুগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। জয়কলস হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ মুজিবুর রহমান জানান, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা মহাসড়কে চলাচল করা অবৈধ। খুব দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।##