কক্সবাজারের পেকুয়ায় দুবৃর্ত্তরা কুপিয়ে জখম করেছে এক মুদির দোকানদারকে। এর জের ধরে গভীর রাতেই আগুনে ভস্মীভূত হয়েছে জখমী ব্যক্তির মুদির দোকানটি। গভীর রাতে ওই দোকানে আগুনের সুত্রপাত হয়েছে। এ সময় একটি মুদির দোকান পুঁড়ে ছাই হয়ে যায়। হামলা ও অগ্নিকান্ডের এ ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভের সঞ্চার তৈরী হয়েছে। স্থানীয়রা জখমী ব্যক্তিকে উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। গত বৃহস্পতিবার (২৬ মে) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে হামলার এ ঘটনা ও পরের দিন শুক্রবার (২৭ মে) দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে উপজেলার টইটং ইউনিয়নের ধনিয়াকাটায় এ ঘটনা ঘটে। জখমী ব্যক্তির নাম নেজাম উদ্দিন (৩২)। তিনি ধনিয়াকাটার বাদশা মিয়ার পুত্র। খবর পেয়ে টইটং ইউপির চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী অগ্নিকান্ডে ভস্মীভূত মুদির দোকানটি পরিদর্শন করেছেন। স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার ২৬ মে রাতে ধনিয়াকাটায় নেজাম উদ্দিনের মালিকানাধীন মুদির দোকানে একদল দুবৃর্ত্ত হানা দেয়। এ সময় তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে মুদির দোকানদার নেজাম উদ্দিনকে মাথায় কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। রক্তাক্ত ও মূমুর্ষূ অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্ব্স্থ্যা কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরের দিন শুক্রবার ২৭ মে দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে নেজাম উদ্দিনের মালিকানাধীন মুদির দোকানে অগ্নিকান্ডের ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। আগুন দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা ওই স্থানে জড়ো হন। তারা পানি ছিটিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে চেষ্টা করছিলেন। আগুনের লেলিহান শিখায় মুদির দোকানটি ভস্মীভূত হয়েছে। এ সময় ওই দোকানের মালামালসহ আগুনে পুঁড়ে ৩ লক্ষ টাকা ক্ষতি সাধিত হয়েছে। আগুনে পুঁড়ে গেছে ফ্রিজ, এলইডিসহ ইলেকট্রনিক্স পণ্য। এ ছাড়াও চাল, আটা, ময়দা ও চিনিসহ নিত্যপণ্য পুঁড়ে ছাই হয়ে গেছে। প্রত্যক্ষদর্শী গাছ ব্যবসায়ী শাহাব উদ্দিন জানান, নেজাম আমার ছোট ভাই। তার কাছ থেকে দোকানে গিয়ে কয়েকজন চি্িহ্নত ব্যক্তি চাঁদা দাবী করে। এ নিয়ে তাকে মাথায় কুপিয়ে জখম করে। ভাই ছিল মেডিকেলে। কিন্তু পর দিন রাতে গিয়ে তার দোকানে আগুন ধরিয়ে দেয়। তেলসহ একটি বোতল উদ্ধার করা হয়েছে। হামলার বিষয়ে আবছার মেম্বার বিচার করেছে। কিছু জরিমানাও করেছে। তবে তারা এতে ্িক্ষপ্ত হয়ে রাতে দোকানে আগুন দিয়েছে। নেজাম উদ্দিনের স্ত্রী মুন্নি জানান, আমার স্বামী সর্বস্বান্ত হয়ে গেছে। কিস্তি নিয়ে ব্যবসা করছে। মুক্তি, ব্রাক ব্যাংক, বুরো ব্যাংক, কোষ্ট শাপলা নামক প্রতিষ্টান থেকে ঋণ নিয়েছে। এখন কিস্তি কিভাবে পরিশোধ করবো। নেজামের ভাবী গিয়াস উদ্দিনের স্ত্রী জেয়াসমিন জানান, বৃহস্পতিবার রাতে মদ খেয়ে কয়েকজন লোক নেজামের দোকানে গিয়েছিল। তারা নেজামের কাছ থেকে টাকা চান। এরপর নেজামকে কুপিয়ে জখম করা হয়। ওই মাদক সেবীরাই পরের দিন রাতে তার দোকানে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। রাতে আগুন দেখতে পেয়ে আমরা দ্রæত এসেছি। তেল এনেছে বোতলে করে। দোকানের ভিতরে তেলভর্তি বোতলে আগুন দিয়ে দোকানের ভিতরে ফেলে দেয়। এরপর ওই আগুনে পুঁড়ে গেছে দোকানটি। সোলেমান জানান, এটি খুবই নিষ্টুরতা। একজন মানুষকে কুপানো হয়েছে। এরপর তার দোকানে আগুন দেয়া হয়েছে। আমরা মর্মাহত হয়েছি। হাসিনা বেগম জানান, সর্বস্বান্ত হয়ে গেছে নেজাম। প্রতিবেশী ইকবাল জানান, এ দোকানটি এক সময় আমি করতাম। এখন আমি মাসিক ৮শ টাকা ভাড়া নিয়ে নেজামকে দিয়েছি। এটি পরিকল্পিত আগুন। ধনিয়াকাটা বাজারের ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম জানান, একটি বোতল উদ্ধার করা হয়েছে। মূলত ওই বোতলে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে কেরোসিন। আমরা এখন অনুসন্ধান করছি কোন দোকান থেকে তেল নিয়েছে। আর কারা নিয়েছে। এসবের মধ্যে রহস্য আছে। এ ব্যাপারে টইটংয়ের ইউপি চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, আমি বিষয়টি দেখে খুবই কষ্ট পেয়েছি। পেকুয়া থানার ওসি তদন্ত কানন সরকার জানান, বিষয়টি আমাকে জানানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।