চট্টগ্রাম লোহাগাড়ায় সাসপেন্স পুলিশ কনস্টেবলকে ইভটিজিং করার সময় নিষেধ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে পথচারী আরিফ নামের যুবক ছুরি আঘাতের হামলার শিকার হয়েছে। আরিফ(২২) চুনতি দারোগা পাড়ার ২নং ওয়ার্ডের আব্দুল গফুরের পুত্র। গত ৮ই জুন বুধবার রাত আনুমানিক সাড়ে নয়টায় চুনতি হাফেজিয়া মাদরাসার পশ্চিম পার্শে রাস্তায় রেলওয়ে সংলগ্ন এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে যুবকটি আহত অবস্থায় পদুয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার বড়ভাই শাহেদ।
সুত্রমতে, উপজেলা চুনতি হাফেজিয়া আর্দশ দাখিল মাদরাসায় ছাত্রছাত্রীরা ছুটির পর বাড়ি যাওয়ার পথে বিকাল সাড়ে চারটার দিকে মাদরাসার ১০০ গজ পশ্চিমে দোকানের সামনে রাস্তায় এক ছাত্রীকে পুলিশ কনস্টেবল নেজাতসহ অন্য দুইজন পিছনে পিছনে ছুটে নানান রকম ধাঁধার ছলে ইভটিজিং করতে থাকে। এ সময় ছাত্রীদেরকে বিরক্ত না করতে নিষেধ করার কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে একইদিনে রাত সাড়ে নয়টায় আরিফ এশারের নামাজ শেষ করে বাড়ি যাওয়ার পথে রাস্তার গতিরোধ করে মোটরসাইকেল যোগে সাসপেন্স কনস্টবল নেজাত ও তার ভাই সাজ্জাদসহ আরো দুইতিনজন ধারালো ছুরি দিয়ে আরিফের শরীরে আঘাত করে চলে যায়। এসময় সে মাটিতে পড়ে যায় ও তার আর্তচিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। বখাটে নেজাত ও সাজ্জাদ আধুনগরের ধামির ঘোনা গ্রামের মান্নন প্রকাশ খুনি মান্নানের ছেলে বলে জানা যায়। অন্যদের এখনও পরিচয় পাওয়া যায়নি।
পদুয়া স্থাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক জানান আহত লোকটি শরীরে বিভিন্ন জায়গায় ছুরির আঘাতপ্রাপ্ত হয়। তার প্রাথমিক চিকিৎসা চলমান আছে। এদিকে ইভটিজিং-এ বাঁধা দেওয়া ব্যক্তি হামলার শিকার হওয়ায় নিন্দা জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতনমহল ও মানবাধিকার কমিশনের নেতৃবৃন্দ। অনতিবিলম্বে চিহ্নিত অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে যথাযোগ্য শাস্তির দাবি জানান তাঁরা। অপরদিকে মাদরাসার ছাত্রছাত্রীর অভিভাকগণ তাদের ছেলেমেয়েদের মাদরাসায় যাওয়া-আসা নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন। এবিষয়ে মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আলহাজ জসিম উদ্দিন কবির জানান, ঘটনাটি খুব দুঃখ ও লজ্জাজনক। মাদরাসার পক্ষ থেকে এঘটনার ব্যাপারে আমি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে অবহিত করছি এবং ছাত্রছাত্রীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করনে স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ করছি। এলাকার লোকজন জানান, মান্নানের ছেলে সাসপেন্স কনস্টবল নাজাত ও সাজ্জাদ তাদের নানা অত্যাচারে অনেক নিরীহ লোকজন রেহাই পাচ্ছে না৷ তাদের এক সৎভাই পুলিশ কর্মকর্তার দাপট দেখিয়ে ও নাম ভাঙিয়ে সময়ে অসময়ে কারণে অকারণে মানুষদেরকে নাজেহাল করছে প্রতিনিয়ত। পাত্তা দিচ্ছে না সাধারণ মানুষকে। জানা যায়, এ বখাটে নাজাত বিগত কয়েকবছর আগে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে কনস্টেবল হিসেবে চাকরি নেন। এবং বিগত চার-পাঁচমাস আগে কর্মস্থলে তার উর্ধ্বতন কর্মকতাকে মাতাল অবস্থায় হামলা করার অপরাধে তাকে চাকরি সাময়িক বরখাস্ত করেছে এবং তার শরীরে নেশার প্রকোপ দেখা গেছে বলে নির্ভর সূত্র প্রকাশ। তাদের কারণে এলাকায় নিরব অতিষ্ঠতা বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে, চুনতি পুলিশ ফাঁড়ির এসআই সাজিদ হোসেন জানান, খবর পেয়ে সাথে সাথে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছি। এবং তাদেরকে থানায় যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। তাছাড়া অভিযুক্ত বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া গেলে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ নিয়ে, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সাথে একাধিকবার চেষ্টা করার পরও বক্তব্য নেয়া যায়নি।
এবিষয়ে লোহাগাড়া থানার অফিসার ইনসার্জ আতিকুর রহমান জানান, পুলিশ ইভটিজিং এর ব্যাপারে জিরোটেলেন্টের ভূমিকায় আছে। যে হোকনা কেনো ওই অপরাধীদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।