কক্সবাজারের পেকুয়ায় বয়োবৃদ্ধ স্বামী-স্ত্রী দম্পতিকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করা হয়েছে। স্থানীয়রা জখমী স্বামী স্ত্রীকে উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। শনিবার (২৫ জুন) বিকেলে উপজেলার সদর ইউনিয়নের উত্তর মেহেরনামা চৈরভাঙ্গা নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন-উত্তর মেহেরনামার মৃত মিয়াজান সিকদারের পুত্র আবদুল করিম (৮৫) ও তার স্ত্রী রাজিয়া বেগম (৭০)। পেকুয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বসতভিটা নিয়ে মৃত মিয়াজান সিকদারের পুত্র আবদুল করিম ও তার পুত্রবধূ লুৎফা বেগমের মধ্যে বনিবনা চলছিল। বিগত কয়েক বছর আগে লুৎফা বেগমের স্বামী আজিজ উদ্দিন সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। আবদুল করিমের ৩ ছেলে ও ৫ মেয়ে রয়েছে। ৩৩ শতক আয়তনের বসতিভটাটি আবদুল করিমের রেকর্ডীয় পৈত্রিক মালিকানাধীন সম্পত্তি। তার দুটি বসতভিটা রয়েছে। চৈরভাঙ্গা ষ্টেশনের উত্তর পার্শ্বে আবদুল করিমের বসতবাড়ি। বলিরপাড়া চৈরভাঙ্গা সড়কের জগন্যাবর বাড়ির নিকটে পৃথক একটি বসতভিটা রয়েছে। ওই বসতভিটায় আবদুল করিমের স্ত্রী রাজিয়া বেগম শাক সবজির আবাদ করে। সম্প্রতি ওই বসতভিটা নিয়ে পুত্রবধূ লুৎফা বেগম ও আবদুল করিমের মধ্যে বিরোধের সুত্রপাত হয়। ঘটনার দিন বিকেলে সবজিক্ষেত থেকে ফলন ছিঁড়তে আবদুল করিমের স্ত্রী সেখানে যান। এ সময় তাকে দেখতে পেয়ে পুত্রবধূ লুৎফা বেগম, লুৎফা বেগমের ভাই বারবাকিয়া ইউনিয়নের কাদিমাকাটার মো: রশিদের পুত্র আতিকুর রহমান, মেয়ে শারমিন জন্নাত, মা শাকেরা বেগমসহ ৪/৫ জনের লোকজন বৃদ্ধ শাশুড়ী রাজিয়া বেগমকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে জখম করে। তাকে কিল, ঘুসি ও লাথি মারে। খবর পেয়ে আবদুল করিম স্ত্রীকে উদ্ধার করতে ওই স্থানে পৌছেন। এ সময় হামলাকারীরা তাকেও ধারালো দা নিয়ে কুপিয়ে জখম করে। তার ডান হাতের কব্জির উপরে কুপিয়ে জখম করা হয়। বাম হাতেও গাছের বাটাম দিয়ে আঘাত করা হয়। ডান পায়ের গোঁড়ালিতেও কুপিয়ে জখম করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শী নুরুল হুদা জানান, আমরা এ ধরনের আচরণ দেখে হতবাক হয়েছি। নুরুল হোসেন জানান, বৃদ্ধ স্বামী-স্ত্রী দম্পতিকে পুত্রবধূসহ তার বাপের বাড়ি লোকজন এসে নিষ্ঠুর হামলা করে। গুরা মিয়া বলেন, আমরা দ্রæত গিয়ে উদ্ধার করেছি। আলমাছ খাতুন জানান, বৃদ্ধ আবদুল করিমকে রক্তাক্ত জখম করা হয়েছে। পল্লী চিকিৎসক মো: রফিক বলেন, সম্পত্তি আজিজ উদ্দিনের একক নয়। ৩৩ শতক জায়গার মালিক হবে আবদুল করিমের সব ছেলে-মেয়েরা। কিন্তু তাকে এ বয়সে নিপীড়ন ও হয়রানি করা হচ্ছে। পল্লী চিকিৎসক আতিকুর রহমান জানান, জায়গাটি আবদুল করিমের। রেকর্ড নিয়ে মামলা আছে। অপর মামলা ১৯/৯৯ চলমান রয়েছে। সেখানে একজন কিভাবে মালিক হবে। ওয়ার্ড আ’লীগ সাধারন সম্পাদক মো: কাইছার বলেন, পুত্রবধূ লুৎফা বেগম থানায় অভিযোগ দিয়েছিল। এম,আজম খানসহ বিষয়টি ফায়সালা হয়। থানার এ সিদ্ধান্ত লুৎফা বেগম মানেননি। এরপর ইউনিয়ন পরিষদে বিচার দিয়েছিল। শাহনেওয়াজ মেম্বার বিচারক ছিলেন। সেখানেও সিদ্ধান্ত গেছে লুৎফার বিপক্ষে। পরবর্তীতে শাশুড়-শাশুড়ীকে কুপিয়ে জখম করছে ওই নারী। ইউপি সদস্য নাছির উদ্দিন, সাবেক ইউপি সদস্য আরিফসহ অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এ বিষয়ে ফায়সালাকারী ছিলেন। কিন্তু নিয়ম ও নীতি না মেনে সন্ত্রাসী কায়দায় লুৎফা বেগম জায়গাটি জবর দখলের জন্য মারমুখী আচরণ করছে। পেকুয়া থানার ওসি ফরহাদ আলী জানান, থানায় লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।