কক্সবাজারের পেকুয়ায় সদর ইউনিয়নে জবর দখলে নিল আশরাফুল উলুম মাদ্রাসা সড়কটি। ৩০ বছরের সংযোগ সড়কটিতে সংষ্কারকাজ বাস্তবায়ন হচ্ছিল। সরকারী বরাদ্ধ থেকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ ওই সড়কে ইট বসানোর কাজ আরম্ভ করে। ৮শ ৩০ ফুটের দৈর্ঘ্য সড়কটিতে ইট বসানোর কাজ সমাপ্তির মাত্র ২ ঘন্টা ব্যবধানে ৩ হাজার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম গ্রামীণ সংযোগ সড়কটিতে চলছে জবর দখলের মহোৎসব। নির্মিত হওয়ার ২ ঘন্টা পর আশরাফুল উলুম মাদ্রাসা সড়কটিতে দেওয়া হয়েছে এক চেইনের মধ্যে ৩ টি ব্যারিকেট। স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল ওই সড়কটিতে টিনের ঘেরা দিয়ে জবর দখল মহোৎসবে মেতেছে। মঙ্গলবার (১২ জুলাই) বিকেল ৫ টার দিকে উপজেলা সদর ইউনিয়নের আশরাফুল উলুম মাদ্রাসার নিকটে ব্যারিকেট দিয়ে সড়ক জবর দখলের এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পেকুয়া সদর ইউপির স্থানীয় ৫ নং ওয়ার্ডের সদস্য মো:ফোরকান ওই স্থান পরিদর্শন করেছেন। এ সময় ইউপি সদস্যের উপস্থিতিতে কয়েক শতাধিক লোকজন ওই স্থানে জড়ো হন। এ সময় পথচারীসহ সড়কটি দিয়ে চলাচলকারী লোকজন জানান, বিগত ৩০ বছর আগে পেকুয়া আশরাফুল উলুম মাদ্রাসা সড়কটি নির্মিত হয়েছে। পেকুয়া সদরের সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত মোক্তার আহমদ চৌধুরী সড়কটির নির্মাণ উদ্যোক্তা। সেই সময় তিনি ওই সড়কে মাটি ভরাটকাজ শেষ করে। এরপর সড়কটিতে ইট বসানোর কাজ বাস্তবায়ন করে সরকারী বরাদ্ধ থেকে। এম, বাহাদুর শাহ চেয়ারম্যান থাকা সময়ে সড়কটিতে দু’দফা পুন:সংষ্কারকাজ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বনৌজা শেখ হাসিনা নৌঘাটি সড়কের সদরের আশরাফুল উলুম মাদ্রাসার লাগোয়া ভবনের পূর্ব পাশ দিয়ে সড়কটি উত্তরদিকে বিস্তৃত। মৌলানা জালাল আহমদের বাড়ি হয়ে ডিসি রোডের সাথে এর সংযোগ ঘটেছে। খানা খন্দকে সড়কটিতে যাতায়াত ব্যবস্থা থেমে গিয়েছিল। মানুষের দুর্ভোগ লাঘব করতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ ওই সড়ক সংষ্কারের জন্য সরকারী বরাদ্ধ ছাড় দেন। ইউপির সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য বিজু আক্তার ওই সড়ক সংষ্কার কাজের প্রকল্প সভাপতি। ১০ ফুট প্রস্থ ৮.৩০ ফুট দৈর্ঘ্য সড়কটিতে কয়েক দিন আগে থেকে সংষ্কারকাজ আরম্ভ করা হয়। ঈদের ২ দিন পর ওই সড়কে ইট বসানোর সমাপ্তি হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরের দিকে ইট বসানোর কাজ শেষ হয়। অভিযোগ উঠেছে, বিকেল ৫ টার দিকে সড়কটিতে ঘেরা দেওয়া হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, আশরাফুল উলুম মাদ্রাসার নিকটে বসবাসকারী মৃত মাওলানা একরামের স্ত্রী ও মেয়েরা ওই সড়কটি জবর দখল করে। তারা বহিরাগত কিছু দুবৃর্ত্ত নিয়ে গ্রামীণ সংযোগ সড়কটিতে ব্যারিকেট সৃষ্টি করে। সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, আশরাফুল উলুম মাদ্রাসার সংযোগ সড়কে মাত্র ১শ ফুটের ভেতরে ৩ টি ব্যারিকেট দেওয়া হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী পেকুয়া আদর্শ মহিলা মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ কামাল হোছাইন জানান, ৩০ বছরের রাস্তা। সড়কটির বিপরীতে ২ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ডিসি রোডের সাথে প্রধান সড়কের সঙ্গে এটি গুরুত্বপূর্ন সংযোগ সড়ক। আমরা ৩ হাজার মানুষ যাতায়াত করি। দুটি প্রতিষ্ঠানে শত শত শিক্ষার্থী রয়েছে। তারাও এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে। এখন আমরা অবরুদ্ধ। এ সড়কটি বন্ধ থাকলে কয়েকশত পরিবার ও ৩ হাজার মানুষের যাতায়াত সুবিধা অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে। আশরাফুল উলুম মাদ্রাসার সাথে ডিসি সড়কের দুরত্ব প্রায় ১ কিলোমিটারের বেশী বেড়ে যাবে। অন্যদিকে শেখেরকিল্যাঘোনা ও মিয়ারপাড়ার আংশিক অংশের দুরত্বও বেড়ে যাবে। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আহমদ হোসন বলেন, ৩০ বছর আগে মোক্তার আহমদ চৌধুরী সড়কটি করেছেন। সেই সময় আমরা মাওলানা একরামের পরিবারকে রাস্তার জন্য ২০ হাজার টাকা দিয়েছিলাম। ৩০ বছর পরে এসে রাস্তাটিতে তারা ঘেরা দিয়েছে। আশরাফুল উলুম মাদ্রাসার নায়েবে মোহতামিম মাওলানা আবুল বশর জানান, এ রকম নিষ্টুরতা আমরা দেখেনি। তারা ৩০ বছরের রাস্তায় ঘেরা দিয়েছে। মুসল্লীরা মসজিদে আসতে পারবে না আজ থেকে। আমাদের প্রতিষ্ঠানের অনেক শিক্ষার্থী সরাসরি আর প্রতিষ্ঠানে আসতে পারবেনা। দ্রæত অপসারণ না হলে ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করবে। স্থানীয় ইউপি সদস্য মো: ফোরকান বলেন, আমি বরদাশতা করতে পারছিনা। মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্ববোধ ও বিবেক শক্তি না থাকলে এমন অন্যায় করে। তারা কি পশু হয়ে গিয়েছে। না হলে ৩০ বছরের একটি রাস্তায় কিভাবে এ ভাবে ঘেরা দিতে পারে। আমি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চাই। জনগনের দাবীর পক্ষে আমার রক্তবিন্দু থাকা পর্যন্ত প্রতিবাদ থাকবে। সদর ইউপির চেয়ারম্যান এম, বাহাদুর শাহ বলেন, টি আরের বরাদ্ধ থেকে সড়কটিতে সংষ্কারকাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। আগে ৭ চেইন শেষ করেছি। ঈদের ২ দিন পর অসমাপ্ত ১ চেইন ৩০ ফুটের কাজ শেষ করা হয়েছে। আমাকে জানানো হয়েছে বিষয়টি। আমরা সিদ্ধান্ত নেব।