কক্সবাজারের চকরিয়া বরইতলী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে নেতাদের পছন্দের প্রার্থী নির্বাচিত হবে না দেখে মাঝপথেই কাউন্সিল ও সম্মেলন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এতে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলেন, গত জুনের ৩০ তারিখে সম্মেলনের তারিখ নির্ধারিত থাকলেও শেষ মুহূর্তে তা পরিবর্তন করে ১৪ জুলাই পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
অনেক ডাক-ঢোল পিঠিয়ে আজ ১৪ জুলাই (বৃহস্পতিবার) সকাল ১০ টা থেকে সম্মেলন শুরু হয়ে বিভিন্ন ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও থানা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দরা বক্তব্য প্রদান করেন।
বেলা ১২ টার দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব জাফর আলম এমপি দিকনির্দেশনা মূলক বক্তব্য প্রদানের শেষ পর্যায়ে ঘোষণা দেন সম্মেলন আজ স্থগিত করা হয়েছে। তা শোনে ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়লো! কারণ দীর্ঘ মাস ধরে পরিশ্রম ও ত্যাগ শিকার করা স্থানীয় কাউন্সিলরগণ তা মোটেও আশা করেননি।
আজকের সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী একাধিক নেতৃবৃন্দ জানান, সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক ও সদস্য সচিবের পরামর্শ মতো কাউন্সিলর লিস্ট যথাসময়ে তৈরি করে জমা দেওয়া হয়েছে। বিগত কয়েক মাস যাচাই বাছাই করে চুড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করে সম্মেলন শুরু হওয়ার পরে কোন এক অদৃশ্য কারণে সম্মেলন বন্ধ করা হলো তা আঁচ করতে পেরেছেন বলে জানান।
সভাপতি প্রার্থী নুর মোহাম্মদ বলেন, নব্য হাইব্রিড আওয়ামীলীগ নেতা শুক্কুর মেম্বার নিজেকে সভাপতি পদে প্রার্থীতা ঘোষণা করে, নিশ্চিত হেরে যাওয়ার ভয়ে গতকাল (বুধবার) প্রার্থীতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়। বৃহস্পতিবার সকালে তিনি দলবলসহ সম্মেলন স্থলে উপস্থিত হয়ে সম্মেলন ভন্ডুলের ঘোষণা দিয়ে প্যান্ডেলে ভাংচুর চালায়।
খবর পেয়ে স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও অংগ সংগঠনের নেতা কর্মীরা সভাস্থলে উপস্থিত হলে, তাৎক্ষণিক শুক্কুর মেম্বার তার বাহিনী নিয়ে সভাস্থল ত্যাগ করেন।
অপর সভাপতি প্রার্থী উপজেলা যুবলীগ নেতা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়কের পছন্দের সভাপতি প্রার্থী শুক্কুর মেম্বারকে সভাপতি বানাতে না পেরে, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ভুল বুঝিয়ে আজকের সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে।
সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব ও জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এটিএম জিয়া উদ্দিন চৌধুরী জিয়া বলেন, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র নেতৃবৃন্দের পরামর্শক্রমে অত্যন্ত স্বচ্ছতার সহিত কাউন্সিলর লিস্ট তৈরি করেছে। এই লিস্টের প্রত্যেক সদস্য প্রতিটি নির্বাচনে নৌকার পক্ষে কাজকরা লোক উল্লেখ করে, এই কাউন্সিলর লিস্টে জামাত বিএনপির লোক ঢুকেছে! এটি মানতে তিনি নারাজ।
সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক, জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক কমর উদ্দিন আহমদ বলেন, বরইতলী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর লিস্টে জামাত ও বিএনপির অনেক লোকজনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাননীয় সংসদ সদস্য নিজে উপস্থিত হয়ে আজকের সম্মেলন স্থগিত করেছেন। পছন্দের লোককে সভাপতি করার বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য জাফর আলম এমপি বলেন, জামাত বিএনপির কর্মীদের নাম কাউন্সিলর লিস্টে রয়েছে এমন অভিযোগ ওঠায়, যে কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে তাৎক্ষণিকভাবে সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তীতে সম্মেলনের তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে।