সৈয়দ ইসমাঈল হোসেন সিরাজী
এক সময় বলা হতো শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। আর এখন বলা হচ্ছে শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড কথাটি যথার্থ নয়, বরং সুশিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড।
এক সময় শিক্ষকের শাসনে বাধা ছিলনা , এখন কিন্তু শাসনে বাধা তো আছেই অধিন্ত শিক্ষার্থীরাও শাসন করে শিক্ষককে।
জাতিগতভাবে বাঙালী বহুমাত্রিক, মিশ্র ও শংকর প্রকৃতির জাতি।
জাতিগতভাবে আমরা পরশ্রীকাতর ও পর অনুকরনশীল স্বভাব দোষেও আক্রান্ত ।
ক্ষমতার চাদর-হাওয়া গায়ে লাগলে ধরাকে সরা জ্ঞান থেকে শুরু করে ব্যাঙ বা বেলুন ফুলার মতো বেগতিক অবস্থা, কাণ্ডজ্ঞানহীন রুহ-তাল আচার-আচরণ ।
স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পেরিয়েও আমরা দেশে একটি সর্বজনীন, যুগোপযোগী , স্থির, শিক্ষা নীতি পাইনি; পাইনি আমরা সুষ্ঠু, সুন্দর দীর্ঘ মেয়াদী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা। ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আজ ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বেচ্ছারীতা ও আধিপত্যবাদের ছত্র ছায়ায় অনিয়ম, দূর্নীতির বাসা বেঁধেছে ।
তুলনামূলকভাবে যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডির সভাপতি পদে সরকারি আমলারা বিধি সম্মতভাবে কিংবা পদাধিকার বলে সভাপতি হিসেবে থাকেন, সে সব প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম, দূর্নীতি, স্বেচ্ছাচারীমূলক কর্ম কাণ্ড সংঘটিত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম এবং শিক্ষক গ্রুপিং ও সংক্ষুব্ধতা তুলনামূলকভাবে কম। পক্ষান্তরে যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান সহজ, সরল প্রকৃতির এবং পরনির্ভরশীল টাইপের হয় আর সভাপতি আমলা না হয়ে রাজনৈতিক দলের লোক বা সাধারণ পাবলিক হয়, তা হলে তো আর কথা নেই। সেখানে স্বেচ্ছাচারি, স্বৈরাচারী, শিক্ষক গ্রুপিং, শিক্ষক সংক্ষুব্ধতা, অনিয়ম, দুর্নীতি চর্চার হিড়িক পড়ে ।
কক্সবাজার জেলার অন্তর্গত প্রায় ডজন খানেক স্কুল কলেজ, মাদরাসা যে গুলোতে প্রধান শিক্ষক/সুপার/অধ্যক্ষ এর পদ অবসর জনিত কারণে বা অন্য কোন কারণে শূন্য হয়েছে প্রায় সব প্রতিষ্ঠানেই ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছ সহকারী প্রধান/সহসুপার/ভাইস প্রিন্সিপাল/ (ভাইস প্রিন্সিপাল না থাকলে) জ্যৈষ্ঠ্যতার ভিত্তিতে সিনয়র সহকারী অধ্যাপক বা সিনিয়র প্রভাষককে দায়িত্ব প্রদান কারর বিধান/রেওয়াজ প্রমাণিত ও স্বীকৃত।
পরিতাপের বিষয় যে, প্রায় সব প্রতিষ্ঠানে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল নিজেদের কুকীর্তি ধামাচাপায় রাখার জন্য নানা ষড়যন্ত্র ও অপকৌশলের মাধমে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার বিধি, প্রো বিধি, নীতিমালা, পরিপত্র, রেওয়াজি বিধান ইত্যাদিকে আড়ালে রেখে, অপ ব্যাখ্যা দিয়ে জ্যৈষ্ঠতা লঙ্কঘন করে, সিনিয়র শিক্ষককে ডিঙিয়ে জুনিয়র শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দিয়ে প্রতিষ্ঠানের দীর্ঘ দিনের গড়ে ওঠা চেইন অব কমান্ড নষ্ট করে বিশৃঙ্খলার বীজ বপন করা হয়। যা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার অনুকূল পরিবেশকে উত্তপ্ত করে তোলে । যা কখনও কাম্য নয় ।
সকলের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক। শুভকামনা ।