পেকুয়ায় এতিমখানার জমি দখলে নিতে গেল লাঠিসোটা নিয়ে। ৫২ শতক জায়গা নিয়ে চলছে উত্তেজনা। দুবৃর্ত্তরা ওই জায়গা জবর দখলে নিতে শক্তির মহড়া দিচ্ছে। জায়গা নিয়ে দু’পক্ষের দ্বন্ধ প্রকট আকার ধারণ করেছে। আধিপত্যকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষের মধ্যে মারপিটসহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা দেখা দিয়েছে। খবর পেয়ে পেকুয়া থানা পুলিশ ওই স্থান পরিদর্শন করেছেন। পুলিশ এতিমখানার নিয়ন্ত্রিত জমিতে অনুপ্রবেশ না করতে নিষেধ করেছেন। তবে পুলিশের এসব না মেনে চলছে এতিমদের জন্য দেওয়া ওই সম্পত্তি জবর দখল প্রচেষ্টা। উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের নতুনঘোনায় জায়গা নিয়ে দ্বন্ধ ও বিরোধের এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানান, রাজাখালী নতুনঘোনায় ২০১৮ সালের দিকে মোহাম্মদিয়া আনোয়ারুল উলুম আহমদিয়া হেফজখানা ও এতিমখানা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ২০০৯ সালের ১৫ এপ্রিল নতুনঘোনায় সৌদি প্রবাসী আনোয়ার হোছন ৫২ শতক জমি খরিদ করেন। যার দলিল নং ১৫৯৬। খরিদকৃত জায়গায় আনোয়ার হোছন নামক উদার প্রকৃতির ওই ব্যক্তি সেখানে মোহাম্মদিয়া হেফজখানা ও এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করেন। দরিদ্র এলাকায় ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি বাংলা, ইংরেজী শিক্ষারও ব্যবস্থা রয়েছে ওই প্রতিষ্ঠানে। প্রাথমিক ও নিন্মমাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যক্রম চলছিল ওই প্রতিষ্ঠান থেকে। এলাকার দরিদ্র ও অনাথ শিশুদের পড়ালেখার জন্য অত্র প্রতিষ্টানটি বেশ সুনামের সহিত পরিচালিত হচ্ছিল। স্থানীয়রা জানান, আনোয়ার হোছন মোহাম্মদিয়া হেফজখানা ও এতিমখানার প্রতিষ্ঠাতা। তার খরিদকৃত জমিতে উক্ত প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয়েছে। শিক্ষা বিস্তারের জন্য নিজস্ব অর্থায়ন থেকে শিক্ষকদের বেতন ভাতা দিচ্ছিলেন। এমনকি এতিমদের পড়ালেখার পাশাপাশি এদের ভরণ পোষণ ও খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থাও তার ব্যক্তিগত অর্থায়ন থেকে হয়। সম্প্রতি এতিমখানার ওই জায়গা নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে। একই এলাকার আবুল কাসেম প্রকাশ কাসিম আলীর পুত্র আজিম উদ্দিন প্রকাশ আজু, তার ভাই মোহাম্মদ হোছনসহ ৫/৬ জনের দুবৃর্ত্তরা এতিমখানার জমি জবর দখলে নিতে লাঠিসোটা নিয়ে অনুপ্রবেশ করে। তারা বেড়িবাঁধের বাহিরের অংশে আনোয়ার হোছেনের মালিকানাধীন দালিলিক জমি দখলের প্রচেষ্টা করেন। এ সময় এতিমখানার শিক্ষক ও ছাত্ররা জড়ো হন। তারা জবর দখল ঠেকাতে ওই স্থানে গিয়ে অবস্থান নেয়। আনোয়ার হোছেনের স্ত্রী আয়েশা বেগম জানান, আমার স্বামী এতিমদের জন্য প্রতিষ্ঠান দিয়েছেন। জমি ক্রয় করেছেন ওই প্রতিষ্ঠানের জন্য। ছাত্র-ছাত্রীদের মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য আমরা মাটি ভরাট করে গাছ রোপণ করছিলাম। এ সময় আজিম উদ্দিন প্রকাশ আজুসহ দুবৃর্ত্তরা লাঠি সোটা নিয়ে এসে ত্রাস সৃষ্টি করে। তারা মূলত চাঁদাদাবী করছে। আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। ৩১ জুলাই সকালে তারা লাঠিসোটা নিয়ে এতিমখানার জায়গা জবর দখল করতে চেয়েছিল। মোহাম্মদিয়া হেফজখানার পরিচালক শাহাদাত হোছেন আরিয়ান বলেন আমার বাবা জমি কিনে আল্লাহর ওয়াস্তে প্রতিষ্ঠানে দিয়েছেন। কিন্তু কিছু মানুষ এত লোভী হয় কিভাবে। হেফজখানার শিক্ষক মৌলভী সাইফুল ইসলাম বলেন, এতিমখানার জমির জন্য শক্তি প্রদর্শন করা হচ্ছে। আমরা এদের আচরণ দেখে হতাশ হয়েছি। শিক্ষক হাফেজ বেলাল উদ্দিন জানান, পুলিশ এসেছিল। দখল না করতে কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ। ছাত্র মো: ফারুক, আরমান, মোজাহিদ, কোরবান আলীসহ অনেকে জানান, আমরা প্রতিষ্ঠানের জায়গার জন্য সবাই বের হয়েছিলাম। জান গেলেও এতিমখানার জায়গা অন্যায়ভাবে কাউকে দখল করতে দেবনা। আবদু সাত্তার, আবু জাফর আরো অনেকে জানান, আমরা নিষেধ করেছি। পুলিশ এসেছিল। জায়গাটি আনোয়ার হোছেনের। এতিমখানার জন্য সম্পত্তি কিনেছেন তিনি। পেকুয়া থানার এস,আই জয়নাল ও আবদুল কাদের জানান, আমরা সেখানে গিয়েছিলাম। আইন শৃংখলা অবনতি না করতে সতর্ক করা হয়েছে। আনোয়ার হোছেনের স্ত্রী আয়েশা বেগম থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।