• শনিবার, ০১ এপ্রিল ২০২৩, ০৭:৫০ অপরাহ্ন
  • [gtranslate]
শিরোনাম
আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কুপিয়ে খুন, বদলা নিতে ৬ বাড়িতে আগুন বেনাপোল সীমান্তে ফেনসিডিল-গাঁজা উদ্ধার, আটক ২ আমতলীতে জাহানারা লতিফ মোল্লা ফাইন্ডশনের উদ্যোগে ইফতার সামগ্রী বিতরণ মালুমঘাট দিশারী সমিতির কমিটি গঠন ও ইফতার মাহফিল,আলোচনা সভা সম্পন্ন ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকে তৃনমুলের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করেছে সরকার – পলক ঠাকুরগাঁওয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীকে সাইকেল ও নগত অর্থ প্রদান তিন মাসে ৫৬ সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়েছেন — আইন ও সালিশ কেন্দ্র কোটচাঁদপুরে দুই মোটর সাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ নিহত ১ সংযুক্ত আরব আমিরাতে মৃত্যুবরণ করা চকরিয়ার তিন প্রবাসীর জানাজা সম্পন্ন ঝিনাইদহ পৌরসভার কলাবাগানপাড়ারতিনটি রাস্তার কাজের উদ্বোধন

তাজিয়াকাটা মাদ্রাসায় ক্লাস চলাকালীন ক্যাম্পাসে ঢুকে শিক্ষককে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা

নিজস্ব প্রতিনিধি / ৮৪ Time View
আপডেট : শনিবার, ২৭ আগস্ট, ২০২২

কক্সবাজার জেলার মহেশখালী কুতুবজোমের তাজিয়া কাটায় সুমাইয়া রাঃ বালিকা মাদ্রাসার ক্যাম্পাসে ঢুকে কুপিয়ে মাওলানা জিয়াউর রহমান নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠাতাকে পরিকল্পিত ভাবে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র দিয়ে মারাত্মক জখম করে নির্মমভাবে হত্যা করেছে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী কিশোর গ্যাং বাহিনী এবাদুল্লা ও শরফত গং। ২৫ আগষ্ট বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় কুতুবজোমের তাজিয়া কাটা গ্রামে।

স্থানীয় সুত্রে জানা যায় মাওলানা জিয়াউর রহমান গ্রামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার পর ১৯৯১ সাল পরবর্তী সময়ে মোহাম্মদীয় মাদ্রাসা নামে একটি এবতেদায়ী মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। এটি বেশ কয়েক বছর জরাজীর্ণ অবস্থায় ছিল

পরবর্তীতে ২০০৫সালে কক্সবাজার ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ জাফরুল্লাহ নুরী মোহাম্মদীয় মাদ্রাসার জমি ও স্থিত টিনশেড এর জায়গায় তাজিয়াকাটা সুমাইয়া (রাঃ) বালিকা দাখিল মাদ্রাসা ও এতিম খানা স্থাপন করে।সেই মাদ্রাসায় জিয়াউর রহমান ও তার স্থী রহিমা বেগম শিক্ষকতা করেন। পরবর্তীতে দাখিল ক্লাসের কিছু শিক্ষক নতুন ভাবে এমপিও ভুক্ত হলে নতুন কমিটি জিয়াউর রহমান ও তার স্থীকে শিক্ষকতার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়।
তখন থেকেই মাদ্রাসা কমিটির সাথে জিয়াউর রহমান এর গড়া মোহাম্মদীয় মাদ্রাসার জমি ও টিনশেড এর জন্য চরম বিরোধ চলছিলো। পরবর্তীতে মোহাম্মদীয়া মাদ্রাসার জমি ও টিনশেড এর জন্য মাওলানা জিয়াউর রহমানকে ভাড়া হিসেবে ধায্য করে ৫০০০ টাকা করে ভাড়া প্রদান করে আসছিল কমিটি। ভাড়ার টাকা শিক্ষকদের বেতন থেকে কর্তন করে প্রদান করার কারনে বেশির ভাগ শিক্ষক জিয়াউর রহমান এর প্রতি চরম অসন্তোষ ছিল। জিয়ার রহমান এর পরিবারের লোক সংখ্যা বেশি হওয়ায় অন্যদিকে সুমাইয়া রা মাদ্রাসা থেকে চাকরি বঞ্চিত কিছু শিক্ষক ও জিয়াউর রহমান এর পরিবারের মাধ্যমে তাজিয়াকাটা গ্রামের কুয়েতপাড়া তালিমুল কোরান দারুল হেদায়া নুরানি হেফজ ও এতিমখানা নামে আরেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে। এই প্রতিষ্ঠান চালু হলে ফলশ্রুতিতে সুমাইয়া রা বালিকা মাদ্রাসার শিশু শিক্ষার্থী স্বাভাবিক ভাবেই কমতে থাকে। ফলে সুমাইয়া রা বালিকা মাদ্রাসা কমিটি ও শিক্ষকরা ক্ষুব্ধ হয় জিয়াউর রহমান এর পরিবারের প্রতি।তাদের এই বিরোধ দিনদিন চরম আকার ধারণ করে। ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের দারুল হেদায়া নুরানী মাদ্রাসার বার্ষিক সভার টাকা উত্তোলনের বিষয় নিয়ে স্থানীয় লালার বর গোষ্ঠীর মহিউদ্দিনের সাথে দারুল নুরানী মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা নছর উল্লাহর মধ্যে বিরোধ তৈরি হলে মাওলানা জিয়াউর রহমান তখন এই ঘটনা নিষ্পত্তি করার জন্য ভাইপো নছর উল্লার পক্ষ নেয়। মাদ্রাসা পরিচালনা ও টাকার হিসেব কে কেন্দ্র করে বিগত ৩/৪ আগে নছর উল্লাহ তথা জিয়াউর রহমান পক্ষের লোকজন লালাব বর মহিউদ্দিন পক্ষের সাথে মারামারির এক পর্যায়ে মহিউদ্দিন পক্ষের হাজী করিম বকসুর ছেলে শরফত উল্লাহ আঘাত জনিত রক্তাক্ত হয়। ফলশ্রুতিতে দারুল হেদায়া মাদ্রাসা ও লালাব বর মহিউদ্দিন পক্ষের দখলে চলে যায়। এ ঘটনায় জিয়াউর রহমান কে প্রধান আসামী করে ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে লালাব বর মহিউদ্দিন পক্ষ। এই মামলায় জিয়াউর রহমান ছাড়া সকলেই কারাভোগ করে জামিনে মুক্ত। পরবর্তীতে লালাব বর মহিউদ্দিন পক্ষের শরাফত উল্লাহ,এবাদুল্লাহ,গং সন্ত্রাসী কিশোর গ্যাং বাহিনী নিয়ে জিয়াউর রহমান এর বসত বাড়ি, দোকান, গোয়াল ঘরে হামলা, লুটপাট তান্ডব লীলা চালিয়ে একজনকে মারাত্মক ছুরিকাঘাত করে ভাংচুর করা সহ বিপুল পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি করে ৬টি মহিষ ও অন্যান্য আসবাবপত্র লুট করে নিয়ে যায়। স্থানীয়ভাবে মীমাংসার জন্য ৬ টি মহিষ ও অন্যান্য আসবাবপত্র কুতুব জোমের চেয়ারম্যান শেখ কামাল এর কাছে জমা দেয়। পরবর্তীতে চেয়ারম্যান বিচার করবে বসবে ডাকবে এই বলে কালক্ষেপণ করতে করতে তাদের জিনিস ও ফেরত পায়নি বিচার ও পায়নি এই অভিযোগ তুলে ভুক্তভোগী জিয়াউর রহমান পরিবার অভিযোগ তুলে চেয়ারম্যান এর বিরুদ্ধে। জিয়াউর রহমান পরিবার এর বিশ্বাস চেয়ারম্যান মিটমাট করে দিলে এই বর্বরোচিত নৃশংস হত্যাকান্ড দেখতে হত না। সেই ঘটনায় বারবার চেষ্টা করে ও কোন বিচার না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়ে জিয়াউর রহমান পরিবার। পরবর্তীতে উপায় না দেখে আইনের আশ্রয় নেয়। তারা হামলা, লুটপাট, ভাংচুর সংশ্লিষ্ট আইনে ২/৩ টি মামলা দায়ের করে জিয়াউর রহমান পরিবার । এতে কোন পুলিশি একশন না দেখে এই মামলায় লালাব বর গোষ্ঠীর মহিউদ্দিন গংরা দ্বিগুণ বেপরোয়া হয়ে উঠে যার কারনে সম্পুর্ন পরিকল্পিত ভাবে দিন দুপুরে প্রকাশ্যে মাদ্রাসা ক্লাস চলাকালীন মাদ্রাসার ক্যাম্পাসে ঢুকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সন্ত্রাসী বাহিনীর তান্ডব চালিয়ে মাদ্রাসার ছাত্রী শিক্ষকদের সম্মুখে মাদ্রাসার অফিসের দরজা ভেঙ্গে টেনে হেঁচড়ে মাদ্রাসা মাটে ফেলে সারা শরীরে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে নৃশংসভাবে হত্যা করে ঘাতক দল পালিয়ে যায়।
প্রত্যক্ষর্শীদের ভাষ্যমতে, স্থানীয় সাহেব মিয়ার পুত্র মাওলানা জিয়াউর রহমান ২৫ আগষ্ট সকালে তাজিয়াকাটা সুমাইয়া (রাঃ) বালিকা মাদরাসার ক্যাম্পাসে অবস্থান করছিল।
এ খবর নিয়ে তাদের প্রতিপক্ষ মনছুর আলীর পুত্র শরীফ উদ্দিন প্রঃ শরফত মৃত হাজী করিম বকসুর পুত্র আনছারুল করিম, মহি উদ্দিন প্ৰঃ দানু,মৃত হামিদ বকসুর পুত্র কোরবান আলী প্রঃ কুরবাইন্যা,মোস্তাক আহাম্মদ মোত্তাইক্যা,
এবাদুল্লাহ সহ আরো ৮/১০জনের একটি সংঘবদ্ধ দল দুপুর সাড়ে ১২টার সময় মাওলানা জিয়াউর রহমানকে অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঘেরাও করে সমগ্র মাদরাসা ক্যাম্পাসে বন্দুক উচিয়ে।
জিয়াউর রহমান পরিবার মহেশখালী থানা পুলিশের অসহযোগিতা, স্থানীয় চেয়ারম্যান শেক কামালের উদাসীনতা, গাফেলতি,সুমাইয়া বালিকা মাদ্রাসা কমিটির নিষ্ক্রিয়তা, শিক্ষকগনের চরম পক্ষপাত অবস্থানের কারণে দিন দুপুরে প্রকাশ্যে মাদ্রাসা ক্লাস চলাকালীন মাদ্রাসার ক্যাম্পাসে ঢুকে অফিস কক্ষের দরজা ভেঙ্গে এই হত্যাকান্ড সংঘটিত হয় বলে মহেশখালী থানা ওসির কাছে জিয়াউর রহমান পরিবার অভিযোগ তুলে আহাজারি করেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো ক্যাটাগরি