পেকুয়ায় ক্যান্সার আক্রান্ত ফাতেমাকে বাঁচাতে সাহায্যের প্রয়োজন। দ্রæত চিকিৎসা পেলে জটিল রোগ ক্যান্সার থেকে নিস্তার পাবেন দরিদ্র কৃষকের স্ত্রী গৃহবধূ ফাতেমা বেগম (৩৬)। মরণব্যাধি ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে ফাতেমা বেগম ২ বছর ধরে কঠিন মানবেতর দিনাতিপাত করছেন। চিকিৎসার জন্য অনেক টাকাও ব্যয় করেছেন। অর্থের যোগান দিয়ে তাকে নিয়মিত চিকিৎসা করিয়েছেন স্বামী। বর্তমানে চিকিৎসার জন্য ব্যয়িত অর্থ যোগান দেয়া ফাতেমা বেগমের স্বামী একার পক্ষে অত্যন্ত কঠিন ও জটিল হয়ে দাড়িয়েছে। স্ত্রীকে বাঁচাতে চিকিৎসা সহায়তার জন্য সমাজের বিবেকবান ও মানবতাবোধ সম্পন্ন ব্যক্তিবর্গের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। ফাতেমা বেগমের বাড়ি উপজেলার টইটং ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড পূর্ব মাদ্রাসাপাড়ায়। ফাতেমা বেগম ওই এলাকার মোহাম্মদ মোক্তারের স্ত্রী। স্থানীয়রা জানান, ফাতেমা বেগমের স্বামী মোক্তার আহমদ পেশায় ১ জন কৃষক। পাহাড়ে পান চাষ করেন। গত ২ বছর আগে গৃহবধূ ফাতেমা বেগমের পাকস্থলীতে ব্যাথা অনুভূত হয়েছিল। প্রথম দিকে পেকুয়ায় ডাক্তার দেখানো হয়। এরপরও নিরাময় অনুভূত হয়নি। পরবর্তীতে তাকে চট্টগ্রামে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। অনেক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও গ্যাস্ট্রোবিভাগের চিকিৎসকদের কাছ থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। দীর্ঘ ২ বছর পর তার শরীরে ক্যান্সার সনাক্ত হয়। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্তাবধানে তার শরীরে এ পর্যন্ত চারবার কেমো থেরাপি দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালের ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডাক্তার জন্নাতুননিছা তাকে চিকিৎসা দিচ্ছেন। এর আগে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মাহাফুজুর রহমান, পরিপাকতন্ত্র বিভাগের চিকিৎসক জসিম উদ্দিন, চমেক হাসপাতালের প্রফেসর ডাক্তার মোহাম্মদ হাফিজুল ইসলামসহ অনেক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসা নেওয়া হয়েছে। এ দিকে গৃহবধূ ফাতেমা বেগমকে বাঁচাতে এ পর্যন্ত প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকা ব্যয় করা হয়েছে। ব্যয়িত অর্থ স্বামী যোগান দেন। স্ত্রীকে বাঁচাতে পাহাড়ের মধ্যে ১০ শতক বসতভিটা ছিল। সেটিও ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা দিয়ে বিক্রি করেন। ওই টাকা স্ত্রীর জন্য ব্যয় করেন। ফাতেমাকে বাঁচাতে ওই নারীর মামাত ভাই রাজাখালীর পালাকাটার বাসিন্দা কামাল হোসেন ৫০ হাজার টাকা দেন। এখন চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ নেই। কেমো দিতে হবে আরো কয়েকদফা। এ ব্যাপারে মাদ্রাসাপাড়ার সমাজ কমিটির সর্দার মোহাম্মদ বাদশাহ জানান, মেয়েটি অত্যন্ত ভদ্র ও ন¤্র স্বভাবের। তাকে বাঁচানোর জন্য আমরা দানশীল ব্যক্তিদের সাহায্য প্রার্থনা করছি। প্রতিবেশী মোজাহের আহমদ বলেন, এ ধরনের মানুষকে সহযোগিতা করলে মানবতার বড় দৃষ্টান্ত হবে। স্বামী মোহাম্মদ মোক্তার জানান, সকল হৃদয়বান ব্যক্তি বর্গকে আমার স্ত্রীকে বাঁচানোর জন্য এগিয়ে আসার আহবান করছি। কেউ যদি যোগাযোগ করতে চান ০১৮৯৪-৩৩৮২২৯ আমার ব্যক্তিগত এ নাম্বারে যোগাযোগ করতে পারবেন। ভাসুর মোহাম্মদ কালু বলেন, আমার ভাই ভিটা বিক্রি করে দিয়েছে। দুটি পানের বরজ ছিল। সেগুলিও স্ত্রী চিকিৎসার জন্য বিক্রি করেছে। প্রতিবেশী রুনা, আয়েশা বেগম জানান, ফাতেমার মৃত্যু যন্ত্রণা দেখলে চোখে পানি আসে। এ গরীব মহিলাকে বাঁচাতে আমরাও সরকারসহ সকল স্তরের মানুষের নিকট সাহায্যের আবেদন করছি। ইউপি সদস্য আবদুল জলিল বলেন, তারা অত্যন্ত ভাল মানুষ। এ মানুষগুলি কখনো সমাজের কাছে হাত পাতেনি। স্ত্রীকে বাঁচানোর জন্য মোক্তার সাহায্য চাচ্ছে। আমি কিছু টাকা দিয়েছিলাম। আরো টাকা দেবো। একইভাবে সমাজের বিবেকবান মানুষগুলোকেও আহবান করছি ওই মহিলাকে বাঁচাতে সাহায্য করার জন্য।