ঝিনাইদহের জেলা জুড়ে ছড়িয়ে পড়িছে নিয়োগ বানিজ্য। টাকা যেন বাতাসে ভাসছে। বেসরকারী হাই স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার ৩/৪টি পদে নিয়োগ দিয়ে এই বানিজ্য করছেন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক। এই নিয়োগ নিয়ে মারামারি, দলাদলি ও আদালতে মামলার ঘটনাও ঘটছে।
৩/৪টি পদে কমপক্ষে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হলেও সেই টাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ফান্ডে জমা হচ্ছে না। এদিকে এই নিয়োগ নিয়ে জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারেরও পোয়াবারো। তারা ডিজির প্রতিনিধি নিয়োগের চিঠি দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে কথিত আছে। এদিকে হরিণাকুন্ডু উপজেলার ভালকী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে নিয়োগ বানিজ্যের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। অবৈধ নিয়োগ বোর্ড গঠন করে অর্থের বিনিময়ে পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ জন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খালেদুজ্জামান খালেক ও সভাপতিকে অবৈধ নিয়োগ বাতিল করে বৈধভাবে নিয়োগের জন্য দাবি জানান বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য আনোয়ার হোসেন।
বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য সাবনুর বলেন, মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে গত রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) ভালকী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর, অফিস সহায়ক, নিরাপত্তাকর্মী ও আয়া পদে লোক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এই টাকা ভালকী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খালেদুজ্জামান খালেক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইয়ামিন চৌধুরী ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য আনোয়ার হোসেন অভিযোগ করে বলেন, গোপনে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তথ্য গোপন রেখে এই নিয়োগকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করছে। ৫ সদস্যের যে নিয়োগ বোর্ড গঠন করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ অবৈধ বলেও দাবি করেন তিনি। এ প্রসঙ্গে ম্যানেজিং কমিটির বিদ্যুৎশায়ী সদস্য শিপন আলী বলেন, নাইম নামের এক প্রার্থী নিরাপত্তাকর্মী পদে আবেদন করেন। তাকে অফিস সহায়ক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আরেক প্রার্থী খায়রুল ইসলাম একাই অফিস সহায়কসহ দুই পদে আবেদন করেন। তাকে নিরাপত্তাকর্মী পদে নিযোগ দেওয়া হয়েছে। খায়রুল একাই দুই পদে আবেদন করেন। তমছের আলী নামের এক ব্যক্তি জানান, ছেলের চাকরির জন্য গরু বিক্রি করে সভাপতির কাছে টাকা দিলেও শেষে চাকরি দেয়নি। ভালকী মাধ্যমিক বিদ্যালয়েরর প্রধান শিক্ষক খালেদুজ্জামান খালেক বলেন, আমি বৈধ ভাবে নিয়োগ দিয়েছি। প্রার্থীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা ঘুষ হাতিয়ে নেয়ার বিষয়টি তিনি কৌশলে এড়িয়ে যান। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইয়ামিন চৌধুরী বলেন, ‘সব কিছু বিধি মোতাবেক হয়েছে। স্বচ্ছভাবে প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’ কারো কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে হরিণাকুন্ডু উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফজলুল হক বলেন, ভালকী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারি নিয়োগ সংক্রান্ত কোন অভিযোগ আমার দপ্তরে আসেনি। কেউ অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।