গত এক সপ্তাহ ধরে ভারী বর্ষণের ফলে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে চকরিয়া পৌর এলাকাসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের শতাধিক গ্রামের নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ওইসব এলাকার লক্ষাধিক মানুষ। মাতামুহুরী নদীসহ উপজেলার বিভিন্ন ছোট বড় নদী দিয়ে উজান থেকে নেমে আসা পানি লোকালয়ে প্রবেশ অব্যাহ থাকায় বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এছাড়া এখনো টানা বর্ষণ অব্যাহত থাকার ফলে পাহাড় ধ্বসের আশংকা থাকায় পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরত লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়স্থলে সরে যাওয়ার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে।
জানা যায়, দেশের অন্যান্য স্থানের মতো চকরিয়াতেও গত এক সপ্তাহ ধরে টানা ভারী বর্ষণ হচ্ছে। ছড়াখাল ও নদী সমুহ ভরাট হয়ে যাওয়ায় বৃষ্টি ও ঢলের পানি ভাটির দিকে নামতে পারছেনা। ফলে চকরিয়া পৌরসভাসহ উপজেলার ১৮টি ইউনিয়নের শতাধিক গ্রামের নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন ওইসব নিন্মাঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ। পাশাপাশি ওইসব এলাকার গ্রামীণ সড়কগুলো পানির নিচে তলিয়ে থাকায় যোগাযোগের ক্ষেত্রে চরম বিপর্যয় নেমে এসেছে।
গত সোমবার থেকে টানা এক সপ্তাহ ধরে ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে চকরিয়া পৌরসভা, উপজেলার কাকারা, সুরাজপুর-মানিকপুর, বরইতলী, হারবাং, চিরিঙ্গা, লক্ষ্যারচর, কৈয়ারবিল ও পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রামের নিন্মাঞ্চল জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এসব গ্রামের নিচু এলাকার সড়কগুলো পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় মানুষ বিকল্প পথ হিসেবে নৌকা ও ভেলায় চড়ে যাতায়ত করছে। এখনো ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকায় মাতামুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হচ্ছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বন্যার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
কাকারা, সুরাজপুর-মানিকপুর, বরইতলী, হারবাং, লক্ষ্যারচর, কৈয়ারবিল ও পূর্ব বড় ভেওলা ই্উনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যানগন জানায়, তাদের ইউনিয়ন গুলো মাতামুহুরী নদী ও শাখা নদী সংলগ্ন হওয়ায় ভারী বর্ষণ হলে লোকালয়ে ঢলের পানি ঢুকে পড়ে। ইতিমধ্যে ঢলের পানিতে এসব ইউনিয়নের নিন্ম এলাকার শতাধিক গ্রাম তলিয়ে গেছে। পানিতে তলিয়ে গিয়ে বন্ধ রয়েছে অনেক এলাকার সড়ক যোগাযোগ। ফলে তারা বিকল্প হিসেবে নৌকা ও ভেলায় চড়ে চলাচল করছে।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে উপজেলায় মাঝারি বৃষ্টির ফলে পাহাড়ি ঢলের পানিতে বন্যা ও নদীভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে ভ‚মি ধ্বসের আশঙ্কাও। ইতোমধ্যে উপকূলের মৎস্য ঘেরের ¯øুইচ গেটগুলো খুলে দেয়া হয়েছে। স্ব স্ব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের সার্বক্ষণিক এলাকার খোঁজখবর নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ধ্বসের আশঙ্কায় পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থান করা লোকজনকে সমতলের নিরাপদ স্থানে নিয়ে চলে যাওয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বন্যার আশঙ্কা দেখা দিলে মানুষজনকে আশ্রয় কেন্দ্র সমুহে চলে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে। #