চকরিয়ায় স্বাস্থ্য বিভাগের দুই কর্মচারী আটক করে প্রশাসনে দিল জনতা

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বানিয়ারছড়া স্টেশনে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের মোবাইল কোর্টের ভয় দেখিয়ে টাকা উত্তোলনের সময় উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের দুই কর্মচারীকে আটক করে প্রশাসনের হাতে তুলে দিলেন স্থানীয় জনতা। রবিবার (৬ আগস্ট) বিকালে টাকা উত্তোলনের সময় স্থানীয়রা তাদেরকে আটক করে প্রশাসনের কাছে খবর দেয়। পরে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান স্বাস্থ্য বিভাগের দুই কর্মচারীকে আটক করে উপজেলায় নিয়ে আসেন। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে আদায় করা ২৩ হাজার ৮৪৫ টাকা উদ্ধার করে জব্দ করা হয়।
আটককৃতরা হলেন, চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্যানিটারী ইন্সপেক্টর ও নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক মো. আশরাফ আলী এবং স্বাস্থ্য সহকারি হাসান মুরাদ সিদ্দিকী।

বানিয়ারছাড়া ষ্টেশনের ব্যবসায়ীরা জানায়, রবিবার বিকালে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্যানিটারী ইন্সপেক্টর ও নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক মো. আশরাফ আলী এবং স্বাস্থ্য সহকারি হাসান মুরাদ সিদ্দিকী বানিয়ারছাড়া স্টেশনে আসেন। পরে তারা স্টেশনের বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের মোবাইল কোর্টের ভয় দেখিয়ে বিনা রশিদে টাকা আদায় করতে থাকেন। এ সময় স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মচারীরা রেজাউল করিমের রাইচ মিল থেকে ৭ হাজার টাকা, আহামদিয়া স্টোর (মুদির দোকান) থেকে ৩ হাজার ৬০০ টাকা, রবি স্টোর (মুদির দোকান) থেকে ২ হাজার ২৪৫ টাকা বিছমিল্লাহ স্টোর (মুদির দোকান) থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকা, শিবলী নোমানের মালিকানাধীন মুদির দোকান থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা, হুমায়ন স্টোর (মুদির দোকান) থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকা, তৌহিদ স্টোর (মুদির দোকান) থেকে ২ হাজার ১০০ টাকা ও মন্জুর স্টোর (মুদির দোকান) থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকাসহ সর্বমোট ২৩ হাজার ৮৪৫ টাকা আদায় করে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সন্দেহের সৃষ্টি হলে তারা জড়ো হয়ে জনতার সহায়তায় তাদের আটক করে প্রশাসনের কাছে খবর দেয়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদেরকে আটক করে উপজেলায় নিয়ে আসেন।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান রবিবার রাতে স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, আটককৃতদের বিরুদ্ধে টাকা উত্তোলনের বিষয়টি স্বীকারোক্তিসহ প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে রশিদ বিহীন আদায় করা ২৩ হাজার ৮৪৫ টাকা আলামতসহ জব্দ করা হয়েছে। বিষয়টি কক্সবাজারের সিভিল সার্জনকে অবহিত করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শোভন দত্ত এর জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শোভন দত্ত বলেন, আটককৃতরা যেহেতু স্বাস্থ্য বিভাগের অধিনে কর্মচারী সেজন্য জিম্মায় নেয়া হয়। তিনি আরও বলেন, তারা যেহেতু সরকারি কর্মচারী সেহেতু তারা আমাদের গন্ডির বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। তাদের ব্যাপারে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করা হবে বলেও জানান তিনি। #