• শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৬:২৯ পূর্বাহ্ন
  • [gtranslate]

পেকুয়ায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয় প্লাবিত,পানিবন্দি ৪০ হাজার মানুষ

পেকুয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি / ৬৭১ Time View
আপডেট : সোমবার, ৭ আগস্ট, ২০২৩

বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে প্রবেশ করছে পানি। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কক্সবাজারের পেকুয়ার অন্তত ৪০হাজার বাসিন্দা। টানা ছয় দিনের প্রবল বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে মাতামুহুরি নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে সোমবার সকালে কক্সবাজারের পেকুয়ার পূর্ব মেহেরনামা ফাসের গুদাম এলাকার দুটি পয়েন্টে বেড়িবাঁধের ৮০ মিটার ও ৫০ মিটার অংশ ভেঙ্গে যায়। ফলে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও মাতামুহুরি নদীর পানি প্রবেশ করে সদর ইউনিয়নের মেহেরনামা, সৈকত পাড়া, বলির পাড়া, মোরারপাড়াসহ পাঁচ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

এছাড়া রাজাখালী ইউনিয়নের লালজান পাড়ার স্লুইচগেট সংলগ্ন এলাকার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে তলিয়ে গেছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লালজান পাড়া, রব্বত আলী পাড়া, মিয়ারপাড়া, মাতবরপাড়া, চড়িপারা,বকশিয়াঘোনা, উলুদিয়াপাড়াসহ আরো কয়েকটি গ্রামের প্রায় দশ হাজার মানুষ।

মেহেরনামায় সরেজমিনে দেখা যায়, বেড়িবাঁধের ভাঙ্গা অংশগুলো দিয়ে মাতামুহুরি নদীর পানি তীব্র বেগে প্রবেশ করছে লোকালয়ে। সময়ের সাথে দ্রুত এ ভাঙন বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাশাপাশি পানির পরিমাণ বেড়ে স্থানীয় ও পার্শ্ববর্তী এলাকার রাস্তাঘাট, মসজিদ, ঘরবাড়ি, খামারসহ নানা অবকাঠামো তলিয়ে যাচ্ছে পানির নিচে। তুলনামূলক নিম্নাঞ্চলের মানুষ তাঁদের গৃহপালিত পশুগুলো নিয়ে যাচ্ছে আশ্রয়ণকেন্দ্রে।

পেকুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম.বাহাদুর শাহ বলেন, টানা বৃষ্টিতে কয়েকদিন ধরে মেহেরনামা, নন্দীরপাড়া, বিলহাসুরা, মইয়াদিয়া, সিরাদিয়া, মগকাটা ও বলির পাড়া এলাকায় পানি বেড়ে গিয়েছিলো। এরমধ্যে আজ (সোমবার) মেহেরনামার দুটি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় এক মহা দুর্যোগ দেখা দিয়েছে। ভাঙ্গা বেড়িবাঁধ সংস্কারের জন্য কতৃপক্ষকে অবহিত করেছি। পাশাপাশি এ দুর্যোগের কবলে পড়া মানুষদের শুকনো খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।

এদিকে টানা বর্ষণে উপজেলার ৬০ শতাংশ এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়েছে পড়েছে। শিলখালী ইউনিয়নের হাজ্বীর ঘোনা এলাকার বেশিরভাগ মানুষের ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। এছাড়া এ ইউনিয়নের মুন্সিমুরা,চেপ্টামুরা মাঝেরঘোনা, জারুলবনিয়া,পেঠান মাতবর পাড়ারসহ তিন হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন।

শিলখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল হোছাইন বলেন, পানিবন্দি মানুষদের ঘরবাড়ি ডুবে যাওয়ায় তীব্র খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। তাঁদের জন্য শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

উপজেলার উপকূলীয় অঞ্চল রাজাখালী, মগনামা ও উজানটিয়া ইউনিয়নেও টানা বর্ষণের প্রভাব পড়েছে। এই তিন ইউনিয়নের প্রায় বিশ হাজার মানুষ বর্তমানে পানির নিচেই জীবন যাপন করছে। এরমধ্যে রাজাখালীর লালজান পাড়া ও উজানটিয়ার পেকুয়ার চর এলাকার অবস্থা খুবই নাজুক।

বলিরপাড়ার বাসিন্দা নাছির উদ্দিন, মুরারপাড়ার জাকরিয়া বলেন, প্রতি বর্ষাতেই পানির নিচে চলে যায় আমাদের এলাকা। এরমধ্যে টানা বৃষ্টি হলেই পানি বেড়ে ঘরে ঢুকে পড়ে। তখন জীবনযাপন হয়ে পড়ে দুর্বিষহ। মুলত পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকাতে প্রতিবছর এ সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পূর্বিতা চাকমা বলেন, বেড়িবাঁধের ভাঙ্গা অংশগুলো পরিদর্শন করে এসেছি। পানির নিচে তলিয়ে যাওয়া মানুষদের আশ্রয়ণকেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। পানিবন্দি মানুষের কাছে শুকনো খাবার পৌঁছে দিচ্ছি।এছাড়া পাহাড়ি অঞ্চলে বসবাসরত বাসিন্দাসের পাহাড়ধসের ব্যাপারে সতর্কতার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। আর এ দুর্যোগ মোকাবিলায় সকল ইউপি চেয়ারম্যানদের নিয়ে জরুরি সভার আহবান করা হয়েছে।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো ক্যাটাগরি