• শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮:০৬ পূর্বাহ্ন
  • [gtranslate]

ঝিনাইদহে ফেনসিডিলসহ মাদক কারবারি গ্রেফতার

মোঃ আশিকুর রহমান শাওন ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি / ৫৬ Time View
আপডেট : সোমবার, ১৪ আগস্ট, ২০২৩

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে র‍্যাবের অভিযানে ফেনসিডিলসহ তরিকুল ইসলাম তারেক (৩৭) নামে এক মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত মাদক কারবারি ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার একতারপুর গ্রামের মৃত হায়দার আলীর ছেলে।

র‍্যাব জানায়, রোববার (১৩ আগস্ট) র‍্যাবের একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এদিন বিকেল ৪টার দিকে অভিযান চালিয়ে মাদক ব্যবসায়ী তরিকুল ইসলাম তারেককে গ্রেফতার করে। এ সময় তার কাছ থেকে ৯৫ বোতল ফেনসিডিল, ১টি মোবাইল, ২টি সিমকার্ড এবং নগদ ৮৮২ টাকা উদ্ধার করা হয়। তার বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।

বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক ফেনসিডিল উদ্ধারের খবর প্রায়ই গণমাধ্যমে আসে। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে মাদকাসক্তির বিষয়টি যে বাড়ছে, তা বোঝা যায় এসব সংবাদ দেখলে। ২০১৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা সাময়িকীতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, মাদকাসক্তদের মধ্যে ৫৮ শতাংশ ইয়াবাসেবী। ২৮ শতাংশ আসক্ত ফেনসিডিল ও হেরোইনে। চিকিৎসকরা বলছেন, ফেনসিডিলের বেলাতে দ্রুত গতিতে স্বাস্থ্যের অবনতি হয়। কারণ, ফেনসিডিল খেলে ক্ষুধা কেটে যায়। ঠিকমতো খাওয়া দাওয়া করতে পারে না আসক্তরা। যার কারণে তাদের শরীরে সব ধরনের ভিটামিনের অভাব দেখা দিতে শুরু করে। ফেনসিডিল গ্রহণে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যেতে থাকে বলে চিকিৎসকদের মত।

এ বিষয়ে মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা জানান, ফেন্সিডিল গ্রহণের শুরুর দিকে কিছুটা ফেসিনেশন বা আগ্রহ তৈরি করে। এক পর্যায়ে সেটি নির্ভরশীলতা তৈরি করে। এসময় একদিন এটি গ্রহণ করা বাদ দিলে কিছু শারীরিক উপসর্গ তৈরি হয়, যা হেরোইনের মতো অন্যান্য মাদকের মতোই। এর মধ্যে শরীরে তীব্র ব্যথা হওয়া, নাক দিয়ে পানি ঝরা, ডায়রিয়া হওয়া, মাংস পেশিতে সংকোচন হয় এবং এসময় রোগী অস্থির হয়ে পড়ে।

ফেনসিডিল এক সময় পরিগণিত হতো কাশির সিরাপ হিসেবে। মূল্যও হাতের নাগালে থাকায় ধীরে ধীরে তা তরুণদের কাছে পরিণত হয় নেশার বস্তুতে। একসময় মাদক হিসেবে গণ্য করা হতো না এটাকে। ১৯৯৭ সালে যশোরের চৌগাছায় ২৫০ বোতল ফেনসিডিলসহ গ্রেফতার হন বাদল কুমার পাল। ২০০০ সালে এ মামলায় যাবজ্জীবন সাজা দেয়া হয় তাকে। বাদল পাল রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে ২০০৩ সালে তাকে খালাস দেন হাইকোর্ট। তখন হাইকোর্ট বলেছিলেন, ফেনসিডিল কোনো মাদক না। এটি পরিবহনও কোনো অপরাধ না। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। ২০২২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ফেনসিডিলকে মাদক বলে রায় দেন আপিল বিভাগ। তাই এটি পরিবহনও অবৈধ বলে জানিয়েছেন আদালত।

ভারত থেকে চোরাইপথে আসে দেশে নিষিদ্ধ হওয়া এ কফ সিরাপ। ভারতেও ফেনসিডিল মাদক হিসেবে ব্যাপকভাবে বেড়ে যায় বলে ২০১৩ সালে বিহার রাজ্যে কর্তৃপক্ষ এর ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো ক্যাটাগরি