কক্সবাজারের পেকুয়ায় অপহৃত দু’শিশুকে উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা। আধিপত্যবাদকে কেন্দ্র করে একদল কিশোর গ্যাং আপন সহোদর ওই দু’শিশুকে জোরপূর্বক একটি বাড়িতে আটকিয়ে রাখে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছে। এ সময় শংকিত এ দু’শিশুর স্বজনরা পুলিশের ত্রিপল নাইনে ফোন করে। ৮ এপ্রিল বিকেল ৩ টার দিকে উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের মাতবরপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। অপহৃত দু’শিশুর নাম সাইমন ইসলাম (১২) ও তানভীর মেহেরাব আহাদ (০৯)। এদের পিতার নাম বোরহান উদ্দিন। বাড়ি চট্টগ্রামের বাঁশখালীর পূর্ব পুইছড়িতে। খবর পেয়ে পেকুয়া থানার এ,এস,আই সাঈজুদ্দিনসহ সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার দিন বিকেলে সাইমুন ইসলাম আকাশ ও তার ছোট ভাই তানভীর মেহেরাব আহাদ মাতবরপাড়ার নানা হাসেম পিটারের বাড়ি থেকে হাজী মার্কেটের দিকে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে এ দু’শিশুকে স্থানীয় কয়েকজনের একটি চক্র টানা হ্যাচড়া করে একটি বাড়িতে নিয়ে যায়। এ সময় তারা এ দু’শিশুকে ওই বাড়িতে মারধরসহ প্রায় ২ ঘন্টা আটকিয়ে রাখে। শিশু সাইমন ইসলাম আকাশ ও তানভির মেহেরাব আহাদের মা সাবরিনা মোস্তফা রিকু বলেন, আমার স্বামী মালয়েশিয়ায় থাকে। শ্বাশুড় বাড়ি বাঁশখালীর পূর্ব পুইছড়ি এলাকায়। আমি মাতবরপাড়ায় পিতার বাড়িতে প্রায় ২ বছর ধরে আছি। আমার পিতা-মাতা ভাই-বোনদের পড়ালেখার সুবিধার জন্য চট্টগ্রাম শহরে ভাড়া বাসায় থাকে। আমার দু’ছেলে রাজাখালীতে পড়ালেখা করে। ১ জন ফৈয়জুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণি, ছোটটা পড়ে এখানকার জামিয়াতুল নুরানী মাদ্রাসায়। সে দিন হাজী মার্কেটের যাওয়ার সময় আমার দু’ছেলেকে অপহরণ করা হয়। বাবুলের বাড়িতে আটকিয়ে রাখে। দুশিশুর নানা আবুল হাসেম প্রকাশ হাসেম পিটার জানান, এটি পরিকল্পিত ঘটনা। এর আগে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা আমার ভাইপো কলেজ ছাত্র আশরাফুল ইসলাম আবিদকে মারধর করে। এরপর ক্ষিপ্ত হয়ে তারা আবারো আমার দু’নাতিকে অপহরণ করে। সম্প্রতি মাতবরপাড়ায় কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত বেড়েছে। চেয়ারম্যান সাহেবকে আমরা বিষয়টি অবহিত করেছি।
লবণ চাষী নাছির উদ্দিন জানান, আমিসহ স্থানীয়রা গিয়ে তারা দু’ভাইকে নিয়ে এসেছি। দু’শিশুর মামা পুলিশ সদস্য সাইফুল ইসলাম জানান, আমিও একজন পুলিশ সদস্য। এ বাড়িতে আরেকজন চাচাতো ভাই সেনাবাহিনীতে চাকুরী করে। আমি শুনে স্তম্ভিত হয়ে গেলাম। নিজের গ্রামে এ ধরনের আচরণ খুবই চিন্তার বিষয়। আমি শুনেছি পেকুয়া থানার পুলিশের তাৎক্ষণিক দায়িত্ববোধ। শুধু আমি নই এলাকার মানুষও পুলিশের ভূয়সী প্রশংসা করছে। কারণ তারা এসে খারাপ প্রকৃতির ছেলেদের শায়েস্তা করেছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল আলম জানান, আসলে এখানে উঠতি ছেলেরা একটি সামাজিক সংগঠন করে। এটি ছিল মূলত মানবিক ও মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করা। পরবর্তীতে এখানে বেশ কিছু ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। পুলিশ এসে কয়েকজনকে সতর্কও করেছে। পেকুয়া থানার এ,এস,আই সাঈজুদ্দিন জানান, ত্রিপল নাইন থেকে ফোন পেয়ে আমরা সেখানে গিয়েছিলাম। কোন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে কিছু উঠতি বয়সী ছেলেকে সতর্ক করা হয়েছে। আমরা মানুষের নিরাপত্তার জন্য কাজ করি। যেখানে নাগরিকের নিরাপত্তার বিঘ্ন ঘটবে সেখানে আমরা ছুটে যাবো।