নাটোরের গুরুদাসপুরে অবৈধভাবে তিন ফসলি জমিতে পুকুর খনন কাজের প্রতিবাদ করায় মোঃ কামাল হোসেন (৪৩) নামের এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে। বুধবার দুপুর ১টার দিকে উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের মকিমপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তিকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করে। আহত ব্যক্তি মকিমপুর গ্রামের মোঃ কুরবান মন্ডলের ছেলে।
আহত কামাল হোসেন জানান,‘মকিমপুর এলাকায় হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তিন ফসলি কৃষি জমিতে পুকুর খননের কাজ শুরু করেছিলো মকিমপুর গ্রামের মৃত-আসাদ মন্ডলের ছেলে স্থানীয় ইউপি সদস্য রবিন মন্ডল, মৃত-রমজান প্রাং এর ছেলে আক্তার হোসেন ও মৃত-রিয়াজ সরদারের ছেলে তালেব সরদার। যে জমিতে পুকুর খনন করছিলো সেই জমি খনন করা হলে এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে। এ কারনে গ্রামের সাধরণ মানুষদের গণস্বাক্ষর নিয়ে তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। এরই জেরে বুধবার আনুমানিক ১টার সময় গুরুদাসপুর থেকে মকিমপুরের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন তিনি। মকিমপুর কবরস্থান সংলগ্ন এলাকায় পৌছালে রবিনের নেতৃত্বে তালেব,আকাক্তারসহ আরো কয়েকজন হাতে ধারালো হাসুয়া ও চাইনিজ কুড়াল নিয়ে এসে অতর্কিত হামলা চালায় তার ওপর। ঘটনাস্থলে চাইনিজ কুড়ালের কোপ লেগে তার পিঠ থেকে রক্তখরন হতে শুরু করলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায় এবং স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। তিনি এ ঘটনার সাথে জড়িত সকলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য রবিন মন্ডলের মুঠোফনে একাধিকবার ফোন দিলেও বন্ধ পাওয়া যায়। তবে ঘটনার পর থেকে রবিনসহ তার অনুসারীরা পলাতক রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প.প কর্মকর্তা ডা.মোঃ মুজাহিদুল ইসলাম জানান,‘কামাল হোসেন নামের এক ব্যক্তি শরীরের পেছনের অংশ (পিঠে) ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন নিয়ে জরুরী বিভাগে ভর্তি হয়। পরে তার পিঠে ১৮টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে চিকিৎসা দিয়ে তাকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে।’
চাপিলা ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মাহাবুবুর রহমান বলেন,‘আহত কামাল হোসেন যে পুকুর খনন নিয়ে দ্বন্দের কথা বলেছেন সেই পুকুর উপজেলা প্রশাসন গত তিনদিন পূর্বেই বন্ধ করে দিয়েছে। রবিন মন্ডল ও কামাল হোসেনের দীর্ঘদিন যাবৎ পারিবারিক দ্বন্দ রয়েছে।’
গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ উজ্জল হোসেন বলেন,‘খবর পাওয়া মাত্রই অপরাধীদের গ্রেফতারে মাঠে কাজ করছে পুলিশ। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা আক্তার জানান,‘অবৈধ ভাবে পুকুর খনন বন্ধে উপজেলা প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত আছে। তাছাড়াও যে মকিমপুর এলাকায় যে পুকুরটি খনন কাজ শুরু করেছিলো তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।#