পেকুয়ায় সালিশি বৈঠকে হামলার খবর পাওয়া গেছে। এ সময় প্রতিপক্ষের ভাড়াটে দুবৃর্ত্তদের হামলায় ৩ জন গৃহবধূসহ ৪ জনকে আহত করা হয়েছে। সৃষ্ট ঘটনার রেশ ধরে দুবৃর্ত্তরা বৈঠক থেকে ৮ টি ননজুড়িসিয়াল স্ট্যাম্পসহ চুক্তিনামা লুট করে। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
১০ আগষ্ট (মঙ্গলবার) বিকেল ৫ টার দিকে উপজেলার টইটং ইউনিয়নের গুদিকাটা কমিউনিটি ক্লিনিক সংলগ্ন দোকানে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন ওই ইউনিয়নের খলিফামোড়া এলাকার রমজান আলীর স্ত্রী দিলোয়ারা বেগম (২৫), মো: ফরমানের স্ত্রী হাছিনা বেগম (৩০), নুরুল কাদেরের স্ত্রী জিয়াসমিন আক্তার (৩২), মৃত মো: কালুর ছেলে নুরুল কাদের (৫৫)।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, খলিফা মোড়ার মৃত মো: কালুর পুত্র নুরুল কাদের ও একই এলাকার মৃত বাদশাহ মিয়ার ছেলে নুরুল আবছারের মধ্যে জায়গা ক্রয় ও বন্ধক সংক্রান্ত বিষয়ে বিরোধ চলছিল। নুরুল কাদের পৃথক ৫ টি ননজুড়িসিয়াল স্ট্যাম্পমূলে নুরুল আবছারের কাছ থেকে সাব বিক্রি নামামূলে জায়গা খরিদ করে। এ ছাড়াও ৩ টি কার্টিজ পেপারের চুক্তিনামার ভিত্তিতে একই ব্যক্তির কাছ থেকে পৃথক জায়গা বন্ধক নেন। সাব বিক্রি ও বন্ধক নামা চুক্তিমূলে নুরুল কাদের কয়েক লক্ষ টাকা নুরুল আবছারকে প্রদান করেন।
সম্প্রতি ওই জায়গার দখল নিয়ে নুরুল আবছার চুক্তিনামা গ্রহীতার সঙ্গে ছলচাতুরিসহ চুক্তিনামার অঙ্গীকার ভঙ্গ করছিলেন। ঘটনার দিন বিকেলে ওই ২ জনের বিরোধ নিস্পত্তির জন্য গুদিকাটায় সালিশি বৈঠক হয়েছে। ইউপির ৩ নং ওয়ার্ড সদস্য মনজুর আলম, সাবেক ইউপি সদস্য রুহুল কাদের, টইটং বাজার সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আলম প্রকাশ মাঝিসহ ৩ জন বিচারক ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৈঠকে দু’পক্ষের যুক্তিতর্কের মুহুর্তে ব্যাপক হামলা চালানো হয়েছে। এ ব্যাপারে হামলার শিকার নুরুল কাদের জানান, বিচারকগন আমাকে স্ট্যাম্পের মূল কপি নিয়ে হাজির থাকতে বলেন। আমি ৫ টি স্ট্যাম্পসহ ৩ টি কার্টিজ নিয়ে সেখানে আসি। তবে নুরুল আবছারের পক্ষে খলিফামোড়ার মৃত আলী হোসেনের পুত্র হাকিম আলী, ওয়াজখাতুপাড়ার মৃত আবদুল মজিদের পুত্র জমির হোছন, খলিফামোড়ার নুরুল হকের পুত্র ইসহাক, মৃত বাদশাহ মিয়ার পুত্র নুরুল আবছার, তার পুত্র শাহাব উদ্দিন, কফিল উদ্দিন, আবদুল মতলবের পুত্র আবু তালেবসহ দুবৃর্ত্তরা এলোপাতাড়ি মারধর করে। কিল,ঘুসি,লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আমিসহ আমার স্ত্রী ও পরিবারের ৩ জন নারীসহ ৪ জনকে পিটিয়ে আহত করে। তারা পরিকল্পিতভাবে ৮ টি স্ট্যাম্পসহ চুক্তিনামার মূলকপি ছিনতাই করে।
নুরুল কাদেরের স্ত্রী জিয়াসমিন আক্তার জানান, আমাকে মাটিতে ফেলে টানা হ্যাছড়া করে। আমার কাছ থেকে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা নিয়ে ফেলে। আহত হাছিনা বেগম জানান, আমাকে কিল, ঘুসি ও লাথি মারে। আমার কাছ থেকেও তারা স্বর্ণ নিয়ে ফেলে। মাদ্রাসা ছাত্র আবদু রহমান জানান, তারা মূলত বৈঠকের কথা বলে আমার বাবার কাছ থেকে স্ট্যাম্পগুলি কেড়ে নিয়ে ফেলে। আমার মাসহ ৩ জন মহিলাকে তারা নির্দয়ভাবে পিটিয়েছে। আমার বাবাকেও মারধর করা হয়েছে।
বৈঠকে সালিশি প্রতিনিধি সাবেক ইউপি সদস্য রুহুল কাদের জানান, আসলে এটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা। বৈঠক প্রায় শেষ হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ হাকিম আলীসহ কয়েকজন এসে স্ট্যাম্পগুলি আমার কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে ফেলে। আমি বৈঠকে আসতে অপারগতা প্রকাশ করেছি। মোহাম্মদ মাঝি আমাকে বৈঠকে আসতে বলেছেন। তাই আমি এসেছি। এ স্ট্যাম্প ও চুক্তিনামার লিখক ছিলাম আমি। তারা আমাকেও কিল, ঘুসি মারে। এখন আমি এলাকায় গেলে নাকি আমাকে হামলা করা হবে। এ ধরনের হাকাবকা হচ্ছে।