মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৩৫ অপরাহ্ন

‘ঈদের আগে মাওলানা মামুনুল হককে মুক্তি না দিলে কঠোর কর্মসূচি’

নিজস্ব প্রতিনিধি
  • Update Time : রবিবার, ১৭ মার্চ, ২০২৪
  • ২৪ Time View

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন সংগঠনটির আমির শায়খুল হাদিস আল্লামা ইসমাঈল নুরপুরী।

রোববার পুরানা পল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এ দাবি জানান। এ সময় তিনি বলেন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক আজ ৩ বছর যাবত কারাগারে বন্দী। ২০২১ সালের ১৮ এপ্রিল ৫ রমজান অন্যায়ভাবে জালেম সরকারের পুলিশ বাহিনী তাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পরই তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জামিআ রাহমানিয়া আরাবিয়া সরকারি সহযোগিতায় অন্য একটি গ্রুপকে দখল বুঝিয়ে দেয়া হয় এবং জামিয়াতুত তারবিয়ার ঘাটারচর ও কলাতিয়া দুইটি ক্যাম্পাসই বেআইনিভাবে বন্ধ করে দেয়। এছাড়াও দেশব্যাপী মাওলানা মামুনুল হকের সাথে সম্পৃক্ত বহু প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে পড়েছে। সরকার মাওলানা মামুনুল হককে দমিয়ে রাখতে নানামুখী প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। এভাবে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে একজন নাগরিককে হয়রানি করা অমানবিক।

নানুপুরী আরো বলেন, মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক কারাগারে মানবেতর জীবন যাপন করছেন এবং অনেক অসুস্থও বটে। তার সুচিকিৎসা করা হচ্ছে না এবং তাকে মুক্তি দেয়া হচ্ছে না। কিন্তু আমরা দেখেছি বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন মামলায় বন্দী হলেও ইতোমধ্যে প্রায় অনেকেই মুক্তি পেয়েছেন। তিনি কেন মুক্তি পাচ্ছেন না, তা আমাদের বোধগম্য নয়। মাওলানা মামুনুল হক শুধু একজন রাজনৈতিক নেতা নন; তিনি হাদিসের শিক্ষকতাসহ দ্বীনের বহুবিধ কাজ আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছিলেন। তার কারাবন্দীত্বে অসংখ্য ছাত্র হাদিসের দরস থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তার অনুপুস্থিতিতে পরিবারও বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে। বর্তমান শিক্ষাবর্ষে তার এক ছেলে তাকমিল, অপর ছেলে কোরআনে কারিমের হিফজ শেষ করে পাগড়ি নিয়েছে। জীবনের গুরুত্বপূর্ণ এই অর্জনের সময় তাদের বাবা পাশে নেই। এটা বড় কষ্টের বিষয়। গ্রেফতারের পর তার নামে অন্যায়ভাবে ধারবাহিক ৩০টি নতুন মামলা দেয়া হয়েছে। আগের মামলাসহ মোট ৪১টি মামলা তাকে মোকাবেলা করতে হচ্ছে। মামলার এজহার পড়লেই স্পষ্ট বোঝা যায় প্রত্যেকটি মামলাই ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও সাজানো। এইসব বানোয়াট ও মিথ্যা মামলা সম্পূর্ণ জামিনযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও জামিনে গড়িমসি করা হচ্ছে। একজন দাগী আসামির মতো হাতে হ্যান্ডকাপ, মাথায় হেলমেট ও গায়ে বুলেটপ্রুপ জ্যাকেট পরিয়ে আদালতে আনা-নেয়া করা হয়। যা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। এতে তিনি শারীরিকভাবে ও মানসিকভাবে কষ্ট পাচ্ছেন। এটা সম্পূর্ণ জুলুম ও অন্যায়। এটা ন্যায় বিচারের পরিপন্থী। সরকারের এহেন আচরণে আমরা ক্ষুদ্ধ ও লজ্জিত।
মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক কারান্তরীণ হওয়ার পর থেকেই আমরা রাজপথে এবং হেফাজতে ইসলামসহ বিভিন্ন সংগঠন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে তার মুক্তির দাবি জানিয়ে আসছি। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও তার সহযোগী সংগঠনগুলো এ পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ, পদযাত্রা, মানববন্ধন, গণ স্বাক্ষরসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে। প্রতিটি জেলা থেকে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রেরণ করা হয়েছে। কেন্দ্র ঘোষিত গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে লাখ লাখ মানুষ আমাদের দাবির সাথে একাত্মতা পোষণ করে স্বাক্ষর করেছে। বাংলার মানুষ চায় মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক দ্রুত মুক্তি পাক।

মাওলানা মামুনুল হকের মুক্তি দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেশের শীর্ষ উলামায়ে কেরামের একটি প্রতিনিধি দল সাক্ষাৎ করেছিলেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও তাদেরকে দ্রুত মুক্তি দেয়ার আশ্বাস দেন। সেই আশ্বাসের কার্যকর কোনো ফল আমরা দেখিনি। এতে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। কিছুদিন পূর্বেও শীর্ষ আলেমদের একটি প্রতিনিধি দল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করে। তিনি দৃঢ়ভাবে আশ্বাস দিয়েছেন মাওলানা মামুনুল হককে ঈদের আগেই মুক্তি দেয়া হবে। আমরা মন্ত্রীর আশ্বাসের বাস্তবায়ন দেখতে চাই। মাওলানা মামুনুল হককে ঈদুল ফিতরের আগেই মুক্তি দিতে হবে। অন্যথায় ঈদের পর বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস দেশের জনগণকে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে এবং এতে কোনো অনকাঙ্খিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে এর দায় দায়িত্ব সরকারের ওপর বর্তাবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, যুগ্মমহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মাওলনা কোরবান আলী কাসেমী, মাওলানা তোফাফাজ্জল হোসাইন মিয়াজী, কেন্দ্রীয় অফিস ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুর রহমান হেলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা এনামুল হক মুসা, মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী, কেন্দ্রীয় সহ-সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মাওলানা শরীফ হোসইন, সহ-বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমান, সহ-প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা জহিরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মাওলানা রুহুল আমীন খান, মাওলানা আব্দুস সোবহান, মাওলানা আব্দুল মুমিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মুফতি নুর মোহাম্মদ আজিজী, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা সানাউল্লাহ আমিনী, মহানগর উত্তরের সধারণ সম্পাদক মাওলানা আনোয়ার হোসইন রাজী, যুব মজলিসের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা রাকিবুল ইসলাম, ইসলামী ছাত্র মজলিসের সেক্রেটারী জেনারেল মুহাম্মদ আশিকুর রহমান জাকারিয়া, যুব মজলিস ঢাকা মহানগর সভাপতি মাওলানা জাহিদুজ্জামান, ইসলামী ছাত্রমজলিস ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মুহাম্মদ আশিকুল ইসলাম প্রমুখ।

Please Share This Post in Your Social Media

আরো ক্যাটাগরি
© All rights reserved © 2024 bbcekottor.com
Technical suported by Mohammad Iliych