মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৪৭ অপরাহ্ন

পেকুয়ায় রেঞ্জ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পাহাড়ের জব্দকৃত বালু বিক্রির অভিযোগ

নাজিম উদ্দিন,পেকুয়া (কক্সবাজার)
  • Update Time : মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪
  • ৩৫ Time View

চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের আওতাধীন বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুল হকের বিরুদ্ধে জব্দকৃত পাহাড়ের বালু বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২০ সালে পেকুয়া উপজেলার টইটং ইউনিয়নের পাহাড়ী এলাকা সংগ্রামের জুমে স্থানীয় আবদুল জলিল ও রমিজ পাড়া এলাকার শাকের উল্লাহর নেতৃত্বে একটি বালুখেকো সিণ্ডিকেট পাহাড় কেটে দুটি বিশাল বালুর স্তুপ তৈরি করে। ওই সময় উপজেলা প্রশাসন তা জানতে পেরে অভিযান চালিয়ে প্রায় দশ লক্ষ ঘনফুট বালু জব্দ করে বনবিভাগের জিম্মায় দেন। সাড়ে তিন বছর পর বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুল হক জনৈক শাকের উল্লাহ ও আবদুল জলিলকে ১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে এ বালু বিক্রি করে দিলেন বলে জানান স্থানীয়রা।

টইটং বনকানন এলাকার বাসিন্দা ও সমাজকর্মী জাকের হোসেন বলেন, ২০২০ সালের শেষের দিকে তৎকালীন ইউএনও সংগ্রামের জুম এলাকার পাহাড় কাটা বালুর দুটি স্তুপ জব্দ করে বনবিভাগের জিম্মায় দিয়েছিলেন। এ বালুগুলো ২০২৩ সালের শুরুর দিকে রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুল হক ২০ লাখ টাকা দিয়ে একটি বালুখেকো সিণ্ডিকেটকে বিক্রি করে দিতে চেয়েছিলেন। পরে দরদামে মিল না হওয়ায় এবং স্থানীয় সাংবাদিকেরা জানতে পারায় তখন বিক্রি করা হয়নি। কিন্তু চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রেঞ্জার হাবিব ওই একই সিণ্ডিকেটকে ১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে বালুগুলো বিক্রি করে দিলেন।

এব্যাপারে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজার জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ এম নজরুল বলেন, পাহাড় কেটে পরিবেশ ধ্বংসকারীরা বালু উত্তোলন করবে। আবার সে বালু জব্দ করে চড়া দামে তাঁদের বিক্রি করবে বনবিভাগ। এতে প্রকাশ পায় পরিবেশ ও পাহাড়ের জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হয়ে গেলেও বনবিভাগের কিছু যায় আসেনা। তাঁদের পকেট ভারী হলেই হয়। এমন রক্ষক সেজে বনের সম্পদ ভক্ষণ করা ব্যক্তিদের এসব দায়িত্বশীল জায়গা থেকে অপসারণ জরুরি হয়ে উঠেছে। বন, পরিবেশ-প্রতিবেশ, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। পাহাড়-প্রকৃতি ধ্বংসের ইন্দনদাতা যারাই হোক তাদের চিহ্নিত করে আইনানুসারে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

রেঞ্জ কর্মকর্তার জব্দকৃত পাহাড়ের বালু বিক্রির ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি পেকুয়ায় আসছি বেশিদিন হচ্ছেনা। জানতে পেরেছি টইটং এর বনাঞ্চলে পাহাড় কাটা তিনটি বালুর বড় বড় স্তুপ ছিলো। সরেজমিনে দেখতে পেয়েছি একটি। বাকি দুটি কোথায় গেলো তা আমারও প্রশ্ন। তবে বিষয়টি যেহেতু বনবিভাগের সেহেতু আশা করি তাঁরাই এটি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিবে।

অভিযোগ অস্বীকার করে বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুল হক বলেন, এগুলো স্থানীয় কিছু পাহাড়খেকোদের ষড়যন্ত্র। বালুর স্তুপগুলো কোথায় গেলো এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এব্যাপারে আমি এখন কিছু বলতে পারবোনা। আমাকে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে অনুমতি নিতে হবে।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের বন কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, বনাঞ্চলের কোন সম্পদ কেউ বিক্রি করার অধিকার নেই। যদি কেউ এমন কোন কাজ করে থাকে তাহলে তা হবে সম্পূর্ণ অবৈধ। আমরা এ ব্যাপারটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।

 

Please Share This Post in Your Social Media

আরো ক্যাটাগরি
© All rights reserved © 2024 bbcekottor.com
Technical suported by Mohammad Iliych