সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০৯:০৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বাংলাদেশ সনাতনী সেবক সংঘ পরিচালিত গীতা শিক্ষার্থীদের বার্ষিক মূল্যায়ণ পরীক্ষা সম্পন্ন কক্সবাজার জেলায় ১০ম বারের মতো শ্রেষ্ঠ ওয়ারেন্ট তামিলকারি অফিসার মহসিন ও শ্রেষ্ঠ অস্ত্র উদ্ধারকারী সোলায়মান চকরিয়ায় অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার ঠাকুরগাঁও রানীশংকৈলে ভাইস-চেয়ারম্যান প্রার্থী হযরত আলীকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার চকরিয়ায় যায়যায়দিন ফ্রেন্ডস ফোরাম’র কার্যকরি পরিষদ গঠন পেকুয়ায় দুই ভাইকে কুপিয়ে জখম দল নয় জনগণের চাওয়ায় আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ! — বিএনপি প্রার্থী রাজু পেকুয়ায় প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ ঠাকুরগাঁও রাণীশংকৈলে ভুট্টা ক্ষেত থেকে বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার পেকুয়ায় বজ্রপাতে ২ লবণ চাষির মৃত্যু

সূরা লাইল

বিবিসি একাত্তর ডেস্ক
  • Update Time : শুক্রবার, ৫ এপ্রিল, ২০২৪
  • ৯৬ Time View

এই সূরায় তিনটি বিষয়ের শপথ করে আল্লাহ বলছেন যে, কর্মপ্রচেষ্টার দিক দিয়ে পৃথিবীতে মানুষ দু’ধরনের হয়ে থাকে। একধরনের লোক তারাই, যাদের সত্তাকে সরলপথে চলার জন্য সহজ করে দেওয়া হয়েছে। এরাই সফলকাম এবং তাদের তিনটি গুণাবলী উল্লেখ করা হয়েছে (১-৭ আয়াত)।

আরেক ধরনের লোক আছে, যাদের সত্তাকে বক্রপথে চলার জন্য সহজ করে দেওয়া হয়েছে। এরা ব্যর্থকাম এবং এদের তিনটি দোষ চিহ্নিত করা হয়েছে। অতঃপর তাদের পরিণতি ব্যাখ্যা করা হয়েছে (৮-১৬)।

সবশেষে আল্লাহর সন্তোষভাজন ব্যক্তিদের চরিত্র ও তাদের প্রতিদান বিবৃত করা হয়েছে (১৭-২১ আয়াত)।

১.
وَاللَّيْلِ إِذَا يَغْشَى
অল্লাইলি ইযা-ইয়াগ্শা-।
শপথ রাত্রির, যখন সে আচ্ছন্ন করে

২.
وَالنَّهَارِ إِذَا تَجَلَّى
অন্নাহা-রি ইযা-তাজ্বাল্লা-।
শপথ দিবসের, যখন তা প্রকাশিত হয়

৩.
وَمَا خَلَقَ الذَّكَرَ وَالْأُنثَى
অমা-খলাক্বায্ যাকার অল্উন্সা-।
শপথ তাঁর, যিনি নর ও নারী সৃষ্টি করেছেন,

৪.
إِنَّ سَعْيَكُمْ لَشَتَّى
ইন্না সা’ইয়াকুম্ লাশাত্তা-।
নিশ্চয় তোমাদের কর্ম প্রচেষ্টা বিভিন্ন ধরনের।

অত্র আয়াতটি পূর্বের তিনটি আয়াতে বর্ণিত শপথসমূহের জওয়াব হিসাবে এসেছে। শপথের বিষয়বস্ত্ত রাত্রি ও দিবস, নর ও নারী যেমন পরস্পরে বিপরীতধর্মী, শপথের জবাবটাও এসেছে পরস্পর বিপরীতমুখী। অর্থাৎ মানুষের কর্ম প্রচেষ্টা হলো দু’ধরনের। ভাল ও মন্দ, যা পরবর্তী আয়াতগুলিতে স্পষ্ট হয়েছে। আর সেখানে ভাল ও মন্দ প্রতিটি দলের ৩টি করে বৈশিষ্ট্য বর্ণিত হয়েছে।

৫.
فَأَمَّا مَن أَعْطَى وَاتَّقَى
ফাআম্মা মান্ আ’ত্বোয়া-অত্তাক্ব-।
অতঃপর যে ব্যক্তি দান করে ও আল্লাহভীরু হয়,

৬.
وَصَدَّقَ بِالْحُسْنَى
অ ছোয়াদ্দাক্বা বিল্হুস্না-।
এবং উত্তম বিষয়কে সত্য বলে বিশ্বাস করে,

অত্র দু’টি আয়াতে সৎকর্মশীল ব্যক্তিদের তিনটি গুণ বর্ণনা করা হয়েছে। (এক)- যারা আল্লাহর পথে ব্যয় করে। (দুই)- আল্লাহর বিরুদ্ধাচরণ থেকে বেঁচে থাকে এবং (তিন)- ‘উত্তম বিষয়’ অর্থাৎ তাওহীদের কালেমা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ-কে মনেপ্রাণে সত্য বলে বিশ্বাস করে।

৭.
فَسَنُيَسِّرُهُ لِلْيُسْرَى
ফাসানুইয়াস্সিরুহূ লিল্ইয়ুস্র-।
অচিরেই আমি তাকে সরল পথে চলার জন্য সহজ করে দেবো।

‘সরল পথে চলার জন্য’ অর্থ ‘জান্নাতের জন্য’ (ইবনে কাসীর)। কেননা জান্নাতের পথই হচ্ছে সরল পথ বা সীরাতুল মুস্তাক্বীম। আর এ পথের শেষ ঠিকানাই হলো জান্নাত।

৮.
وَأَمَّا مَن بَخِلَ وَاسْتَغْنَى
অআম্মা-মাম্ বাখিলা অস্তাগ্না-।
পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি কৃপণতা করে ও বেপরোয়া হয়,

৯.
وَكَذَّبَ بِالْحُسْنَى
অ কায্যাবা বিল্হুস্না-।
এবং উত্তম বিষয়কে মিথ্যা মনে করে,

১০.
فَسَنُيَسِّرُهُ لِلْعُسْرَى
ফাসানুইয়াস্সিরুহূ লিল্ ‘উসরা।
অচিরেই আমি তাকে কঠিন পথের জন্য সহজ করে দেবো।

পূর্বের আয়াতে জান্নাতী বান্দাদের তিনটি বৈশিষ্ট্যের বর্ণনা শেষে এবার জাহান্নামীদের তিনটি বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হচ্ছে যে, (এক)- তারা আল্লাহর পথে ব্যয় করার বিষয়ে কৃপণতা করবে। (দুই)- আল্লাহর অবাধ্যতায় বেপরোয়া হবে। এবং (তিন)- তাওহীদের কালেমায় মিথ্যারোপ করবে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সাঃ)-এর বাণীর অবাধ্যতা করবে। তাদের জন্য কঠিন পথ অর্থাৎ জাহান্নামের পথ সহজ করে দেয়া হবে। অসৎকর্ম করা তখন তাদের জন্য সহজ ও মজ্জাগত হয়ে যাবে। এদের পক্ষে জান্নাতের কাজ করাটা কষ্টকর এমনকি অসম্ভব হয়ে দাড়াবে।

উল্লেখ্য যে, শয়তান সর্বদা মুমিনদের এই বলে ধোঁকা দিয়ে থাকে যে, মন্দ লোকেরাই দুনিয়াতে ধন-সম্পদ নিয়ে সুখে আছে। অতএব দ্বীনদার হয়ে কি লাভ? এর জবাব এই যে, বাহ্যিকভাবে এদের সুখী দেখা গেলেও অন্তরজগতে এরা চরম অসুখী, চরম হতভাগা। কারন অসৎকর্ম করার কারনে এরা দুনিয়ার জীবনকে প্রাধান্য দিয়ে জান্নাতের পথ থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখে। আর দুনিয়াতে এটাই এদের জন্য আযাব। আর পরকালের জন্য নির্ধারিত রয়েছে জাহান্নাম।

১১.
وَمَا يُغْنِي عَنْهُ مَالُهُ إِذَا تَرَدَّى
অমা-ইয়ুগ্নী ‘আন্হু মা-লুহূ য় ইযা-তারাদ্দা-।
যখন সে ধ্বংস হবে, তখন তার সম্পদ তার কোনই কাজে আসবে না।

কৃপণের ধন-সম্পদ যেমন তার জীবদ্দশায় কোন কাজে লাগে না। তেমনি তার মৃত্যুর পরেও কোন কাজে লাগে না। কেননা মৃত্যুর পূর্বে সে মাল কমে যাওয়ার ভয়ে কোনরূপ ছাদাক্বায়ে জারিয়া করে যায় না। সে নিজের জন্যই যখন কিছু খরচ করে না। পরের জন্য তো প্রশ্নই ওঠে না। ফলে মৃত্যুর পরে সে কিছুই পায় না। তার আমলনামা শূন্য থাকে। আল্লাহ বলেন, ‘তারা যে বিষয়ে কৃপণতা করেছিল, ক্বিয়ামতের দিন সেগুলিই তাদের গলায় বেড়ী হবে…’ (আল ইমরান ৩/১৮০)। ক্বিয়ামতের দিন তাই সে আফসোস করে বলবে, – ‘আমার মাল আমার কোন কাজেই আসলো না’ (হাক্কাহ ৬৯/২৮)।

১২.
إِنَّ عَلَيْنَا لَلْهُدَى
ইন্না ‘আলাইনা- লাল্হুদা-।
নিঃসন্দেহে পথনির্দেশ দেয়া আমার দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত।

অত্র আয়াতে একথা স্পষ্ট হয় যে, আল্লাহর দেখানো পথই প্রকৃত সুপথ এবং মানুষের জ্ঞান কখনোই চূড়ান্ত সত্যের সন্ধান দিতে পারে না বা সত্যিকারের সুপথ প্রদর্শন করতে পারে না। এজন্য আল্লাহ নিজেই মানুষের হেদায়াতের দায়িত্ব নিয়েছেন। ‘হেদায়াত’ দু’প্রকারের। (১). তাওফীক লাভের হেদায়াত,। যা কেবলমাত্র আল্লাহর হাতে। (২). পথ দেখানোর হেদায়াত। যা আল্লাহ এবং নবী-রাসূল ও আলেমগণের পক্ষ হতে হয়ে থাকে। প্রথমটির দলিল, যেমন আল্লাহ স্বীয় রাসূলকে বলেন, ‘নিশ্চয়ই আপনি হেদায়াত করতে পারেন না যাকে আপনি পছন্দ করেন। বরং আল্লাহ যাকে ইচ্ছা করেন তাকে হেদায়াত দিয়ে থাকেন’ (ক্বাছাছ ২৮/৫৬)। দ্বিতীয় প্রকারের দলিল, যেমন আল্লাহ স্বীয় রাসূলকে বলেন, ‘নিশ্চয়ই আপনি সরল পথ প্রদর্শন করে থাকেন’ (শূরা ৪২/৫২)।

১৩.
وَإِنَّ لَنَا لَلْآخِرَةَ وَالْأُولَى
অইন্না লানা- লাল্আ-খিরতা অল্ ঊলা-।
নিশ্চয়ই ইহকালের ও পরকালের একমাত্র মালিক আমি।

অর্থাৎ আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টি ও পরিচালনা এবং দুনিয়া ও আখেরাতের সার্বিক মালিকানা কেবলমাত্র আল্লাহর হাতে। এই মালিকানায় কেউ সামান্যতম শরীক নয়। আল্লাহ বলেন, ‘অতএব পবিত্র তিনি, যার হাতে রয়েছে সবকিছুর রাজত্ব এবং তাঁর দিকেই তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে’ (ইয়াসীন ৩৬/৮৩)।

১৪.
فَأَنذَرْتُكُمْ نَارًا تَلَظَّى
ফাআর্ন্যাতুকুম্ না-রান্ তালাজ্জোয়া-।
অতএব আমি তোমাদেরকে প্রজ্বলিত অগ্নি থেকে ভয় প্রদর্শন করছি।

১৫.
لَا يَصْلَاهَا إِلَّا الْأَشْقَى
লা-ইয়াছ্লা-হা য় ইল্লাল্ আশ্ক্ব।
নিতান্ত হতভাগ্য ব্যক্তি ছাড়া কেউ তাতে প্রবেশ করবে না,

১৬.
الَّذِي كَذَّبَ وَتَوَلَّى
আল্লাযী কায্যাবা অতাওয়াল্লা-।
যে মিথ্যারোপ করে ও মুখ ফিরিয়ে নেয়।

অর্থাৎ এখানে আল্লাহ নিজেই জাহান্নামের ভয় প্রদর্শন করছেন। এবং বলা হচ্ছে- তারাই সর্বাধিক হতভাগা, যাদের জন্য জাহান্নাম নির্ধারিত হয়ে আছে। আর তাদের বৈশিষ্ট্য হ’ল ‘সে প্রথমে অহি-র বিধানে মিথ্যারোপ করে, অতঃপর বিধান মান্য করা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়’।

আবু জাহল, উমাইয়া বিন খালাফ ও তাদের ন্যায় দুষ্টু লোকদের উদ্দেশ্যে আয়াতটি নাযিল হয় (কুরতুবী)। কেননা এরা ছিল মক্কার সবচেয়ে দুরাচার নেতৃবৃন্দ। যারা রাসূল (সাঃ)-এর প্রতি মিথ্যারোপ করেছিল এবং তাঁকে সত্য জেনেও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। তবে আয়াতটির মর্ম সকল যুগের হতভাগাদের জন্যই প্রযোজ্য। ‘আল্লাহর অহীর বিধান প্রকাশ্যে বাতিল করার মাধ্যমে সে মিথ্যারোপ করে না। বরং আল্লাহর আদিষ্ট বিষয়সমূহ মান্য করতে নিবৃত্ত করার ফলে তা মিথ্যারোপ হিসাবে সাব্যস্ত হয়ে যায়’ (কুরতুবী)। খেয়াল করলে দেখা যাবে যে, বর্তমান যুগে অধিকাংশ মুসলিম সরকার ও সমাজনেতাগণ এটাই করে থাকেন।

১৭.
وَسَيُجَنَّبُهَا الْأَتْقَى
অসাইয়ুজ্বান্নাবুহাল্ আত্ক্ব।
সত্বর এ থেকে দূরে রাখা হবে আল্লাহভীরু ব্যক্তিকে,

এতে বুঝা যায় যে, শুধুমাত্র বিশ্বাস দিয়ে আমল হয় না, বরং আমলের জন্য চাই আল্লাহভীতি। বিশ্বাস আছে কিন্তু আল্লাহভীতি নেই, সে ব্যক্তির আমলে খুলূছিয়াত নেই। অতএব তাকে জাহান্নাম থেকে দূরে রাখা হবে না। জাহান্নাম থেকে দূরে রাখা হবে শুদ্ধ চরিত্র সর্বাধিক আল্লাহভীরু ব্যক্তিকে।

১৮.
الَّذِي يُؤْتِي مَالَهُ يَتَزَكَّى
আল্লাযী ইয়ু”তী মা-লাহূ ইয়াতাযাক্কা-।
যে তার ধন-সম্পদ দান করে আত্মশুদ্ধির জন্য

১৯.
وَمَا لِأَحَدٍ عِندَهُ مِن نِّعْمَةٍ تُجْزَى
অমা-লিআহাদিন্ ‘ইন্দাহূ মিন্ নি’মাতিন্ তুজযা য়।
তার প্রতি কারো অনুগ্রহের প্রতিদান হিসেবে নয়।

মুফাসসিরের মতে এই আয়াতগুলি হযরত আবুবকর (রাঃ) সম্পর্কে নাযিল হয়েছে। উমাইয়া ইবনে খালাফের ক্রীতদাস ছিলেন বেলাল (রাঃ)। ইসলাম কবুলের অপরাধে তাঁর উপরে অমানুষিক নির্যাতন চালানো হতো। প্রচন্ড রোদে স্ফুলিঙ্গ সদৃশ মরু বালুকার উপরে হাত-পা বেঁধে তাকে নগ্নদেহে চিৎ করে ফেলে বুকের উপরে ভারি পাথর চাপিয়ে দেয়া হতো। আর বলা হতো – ‘তোকে এভাবেই থাকতে হবে, যতক্ষণ না তুই মরবি অথবা মুহাম্মাদকে অস্বীকার করবি’। কিন্তু ঐ অবর্ণনীয় কষ্টের মধ্যেও বেলালের মুখ থেকে কেবলই বের হতো ‘আহাদ’ ‘আহাদ’। একদিন রাসূল (সাঃ) পাশ দিয়ে যাবার সময় এই দৃশ্য দেখলেন এবং বললেন, ‘নিশ্চয়ই ‘আহাদ’ অর্থাৎ আল্লাহ তোমাকে মুক্তি দেবেন’। তিনি তখন হযরত আবুবকর (রাঃ)কে যেয়ে বললেন, ‘হে আবুবকর! নিশ্চয়ই বেলাল আল্লাহর পথে শাস্তি ভোগ করছে’। আবুবকর (রাঃ) ইঙ্গিত বুঝলেন। অতঃপর তিনি উমাইয়া বিন খালাফের কাছ থেকে বেলাল (রাঃ)কে ‘নিসতাস’-এর বিনিময়ে এবং একটি মূল্যবান চাদর ও ১০টি স্বর্ণমুদ্রার (উক্বিয়া) বিনিময়ে খরিদ করে মুক্ত করে দেন। তখন কাফেররা বলতে থাকে যে, আবুবকরের উপরে বেলালের অনুগ্রহ ছিল, যার প্রতিদান হিসাবে তিনি তাকে মুক্ত করেছেন। তখন অত্র আয়াতদ্বয় নাযিল হয়। অর্থাৎ যে ব্যক্তি তার মাল-সম্পদ খরচ করে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে তাঁরই দেখানো পথে আত্মশুদ্ধি ও মালশুদ্ধির জন্য। এর মধ্যে কোনরূপ শ্রুতি বা লোক দেখানো উদ্দেশ্য থাকে না। এবং কারো কোনরূপ অনুগ্রহ বা দানের প্রতিদান হিসাবে তিনি দান করেন না। বা কারো প্রতি কোন অনুগ্রহের দায়বদ্ধতা তার মধ্যে থাকে না। কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য। যেমনটা হযরত আবুবকর (রাঃ) করেছিলেন।

২০.
إِلَّا ابْتِغَاء وَجْهِ رَبِّهِ الْأَعْلَى
ইল্লাব্তিগা-য়া অজহি রব্বিহিল্ ‘আলা-।
কেবলমাত্র নিজের রবের সন্তুষ্টি লাভের জন্য।

২১.
وَلَسَوْفَ يَرْضَى
অলাসাওফা ইর্য়াদ্বোয়া-।
সে সত্বরই (আল্লাহর নিয়ামাত পেয়ে) সন্তুষ্টি লাভ করবে।

অর্থাৎ যে ব্যক্তি পূর্বে বর্ণিত গুণাবলী অর্জন করবে, সে ব্যক্তি সত্বর আল্লাহর সন্তোষ লাভে ধন্য হবে। আর তা হলো- (ক) সর্বাধিক আল্লাহভীরু হওয়া এবং (খ) শুধুমাত্র আত্মশুদ্ধি ও মালশুদ্ধির জন্য আল্লাহর ওয়াস্তে ব্যয় করা’। আর অবশ্যই সে অচিরে আল্লাহর সন্তোষভাজন হবে অশেষ ছওয়াব লাভের মাধ্যমে। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করার চূড়ান্ত প্রতিদান হলো আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।

মুফাসসিরের মতে, অত্র আয়াতগুলি হযরত আবুবকর (রাঃ)-এর শানে নাযিল হয়েছে (ইবনে কাসীর)। যদিও আয়াতের মর্ম ব্যাপক এবং সর্বযুগীয়। নিঃসেন্দেহে আবুবকর (রাঃ)-এর মহান চরিত্রে উপরোক্ত গুণাবলীর একত্র সমাবেশ ঘটেছিল। আল্লাহভীরুতা ও নিঃস্বার্থ দানশীলতায় তিনি ছিলেন উম্মতের সেরা ব্যক্তিত্ব। আর শেষের আয়াতটিতে যেন হযরত আবুবকর (রাঃ)-এর জন্য জান্নাতের অগ্রিম সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ আমাদেরকে ঐ সকল পবিত্রাত্মাগণের সাথে জান্নাতের অধিবাসী করুন -আমীন!

Please Share This Post in Your Social Media

আরো ক্যাটাগরি
© All rights reserved © 2024 bbcekottor.com
Technical suported by Mohammad Iliych